অন্যান্যচট্টগ্রামচট্টগ্রাম বিভাগ

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের মর্যাদা রক্ষায় ঐক্যের ডাক

মুহাম্মদ জুবাইর:

জাহিদুল করিম কচি ও মইনুদ্দীন কাদেরী শওকতের যৌথ আহ্বান

চট্টগ্রাম, ২৯ নভেম্বর ২০২৫ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ঐতিহ্য, মর্যাদা এবং সাংবাদিকতা পেশার শৃঙ্খলা অটুট রাখতে সকল সদস্যকে সক্রিয় ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সদস্যসচিব ও দৈনিক আমার দেশ–এর আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি এবং শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক ও ইজতিহাদ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত।

শনিবার (২৯ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে দুই সিনিয়র সাংবাদিক জানান, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব শুধু একটি ভবন নয়, এটি স্বাধীনচিন্তার মসনদ, মুক্ত সংবাদচর্চার প্রতীক এবং সাংবাদিক সমাজের নৈতিক দৃঢ়তার প্রাণকেন্দ্র। এই মর্যাদা ধরে রাখতে হলে সকল সদস্যের নিয়মিত উপস্থিতি, দায়িত্ববোধ এবং পেশাদারিত্বই সবচেয়ে বড় শক্তি।

“প্রেস ক্লাবে ফিরে আসুন—প্রাপ্য সেবা গ্রহণ করুন”
বিবৃতিতে তাঁরা ক্লাবের সদস্য, সদস্যা এবং সাংবাদিকতা–সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়মিত প্রেস ক্লাবে এসে প্রাপ্য সেবা গ্রহণসহ ক্লাবকে আবারও প্রাণবন্ত করে তোলার আহ্বান জানান। তারা উল্লেখ করেন—সংগঠন শক্তিশালী হয় সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণে। অতীতের বিভেদ ভুলে সবার উচিত প্রেস ক্লাবকে আবার তার স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে ফিরিয়ে আনা।

ফ্যাসিবাদী সময়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা এবং গণবিপ্লবের প্রেক্ষাপট:

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় কিছু স্বার্থান্বেষী সাংবাদিকের পক্ষপাত, ক্ষমতাসীনদের দালালি ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে প্রেস ক্লাবের ভাবমূর্তিতে আঘাত লাগে। ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় গুলিবর্ষণ ও হামলা–নির্যাতনে উসকানিমূলক ভূমিকায় ক্লাবটি ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষের টার্গেটে পরিণত হয়েছিল।

তবে একই সময়ে ২০০৮ সাল থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সামনের সারিতে থাকা সাহসী সাংবাদিক ও সম্পাদকদের দৃঢ় অবস্থান এবং আত্মত্যাগ ক্লাবকে বড় ধরনের ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে—বিবৃতিতে এমনটিও উল্লেখ করা হয়।

তত্ত্বাবধানে পুনরায় কার্যক্রম শুরু, আসছে চিকিৎসাসেবা:
গত বছরের নভেম্বর থেকে সরকারি তত্ত্বাবধানে প্রেস ক্লাব পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। এরপর ক্লাবে সাংবাদিক, সদস্য ও সাধারণ মানুষ নিয়মিত সেবা গ্রহণ করছেন। অচিরেই ক্লাবের চিকিৎসাসেবাও আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে, বলে জানান দুই সম্পাদক।

সংবিধান ও নাগরিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা:

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়,বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ ও ৩৮ নম্বর অনুচ্ছেদ নাগরিককে সভা–সমাবেশ ও সংগঠন করার অধিকার দিয়েছে—যথাযথ জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতার সীমারেখায়। প্রেস ক্লাব সেই সাংবিধানিক স্বাধীনতারই একটি মহৎ প্রতীক।
তাঁরা আরও স্পষ্ট বক্তব্য দেন—চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব শান্তিপ্রিয়, দায়িত্বশীল ও গণতন্ত্র–বিশ্বাসী সাংবাদিকদের দ্বিতীয় আবাসস্থল। এখানে ফ্যাসিবাদী, উগ্রপন্থী, গুজবচর্চাকারী কিংবা সহিংস মনোভাবাপন্ন কারও স্থান নেই।

সকল সদস্যকে সক্রিয় হওয়ার অনুরোধ
দুই সম্পাদক বলেন,আমরা সবাই যদি সততা, পেশাদারিত্ব ও সংহতি বজায় রাখি—তাহলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব শুধু তার গৌরব ফিরে পাবে না, দেশের গণমাধ্যম জগতেও আদর্শ স্থাপন করবে।

বিবৃতির শেষে তাঁরা প্রেস ক্লাবের মর্যাদা রক্ষা, সাংবাদিকতার সম্মান পুনরুদ্ধার এবং সাংবাদিক সমাজে ঐক্য প্রতিষ্ঠায় সকল সদস্যকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button