নারীর সুরক্ষা ও মর্যাদা: ঝিনুকের বুকে লুকানো মুক্তার উপমা
ইসলাম ও জীবন ডেস্ক: ইসলামি শরিয়তে নারীর সম্মান, মর্যাদা ও সুরক্ষার জন্য পর্দার বিধানকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একজন নারী নিজেকে যত বেশি সংযত ও আড়ালে রাখবেন, ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি তত বেশি নিরাপদ ও সম্মানিত থাকবেন। এ প্রসঙ্গে হাদিস শরীফে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
হজরত আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, “নারী হলো ‘আওরাত’ বা গোপন করার যোগ্য (আবরণীয়) বিষয়। যখন সে (পর্দা ছাড়া) বাইরে বের হয়, তখন শয়তান তার দিকে উঁকি দেয় (বা তার পিছু নেয়)।” (জামে আত-তিরমিজি, হাদিস নং: ১১৭৩)
এই হাদিসের মর্মার্থ হলো, একজন আদর্শ নারীর উচিত নিজেকে পরপুরুষের দৃষ্টি থেকে আড়ালে রাখা এবং অত্যন্ত শালীন ও সংযতভাবে চলাফেরা করা। কারণ, নারীরা যখন বেপর্দা হয়ে বাইরে বের হন, তখন শয়তান তাকে কুমন্ত্রণা দেয় এবং তাকে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণের বস্তুতে পরিণত করার চেষ্টা করে। এটি নারীর দুনিয়া ও আখেরাত—উভয় জগতের জন্যই ক্ষতিকর।
বর্তমান যুগে তথাকথিত স্বাধীনতার নামে নিজেকে উন্মুক্ত করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তবে ইসলামি চিন্তাবিদদের মতে, প্রকৃত মর্যাদা অবাধ স্বাধীনতার প্রদর্শনীতে নয়, বরং নিজেকে সযত্নে রক্ষা করার মধ্যেই নিহিত। বিষয়টি বোঝাতে একটি চমৎকার উপমা দেওয়া যেতে পারে।
জলাশয়ের ওপর ভাসমান কচুরিপানা নিজেকে খুব স্বাধীন মনে করে স্রোতের তালে ভেসে বেড়ায়, কিন্তু বাস্তবে এর কদর বা মূল্য খুবই নগণ্য। পক্ষান্তরে, মহামূল্যবান মুক্তা নিজেকে পানির গভীর তলদেশে ঝিনুকের শক্ত খোলসের ভেতরে লুকিয়ে রাখে। লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকে বলেই মুক্তার এত দাম ও কদর।
ইসলাম নারীকে সেই ঝিনুকের ভেতর লুকানো মুক্তার মতোই দামী, কোমল ও মর্যাদাবান হিসেবে বিবেচনা করে। তাই পর্দার বিধান নারীর জন্য কোনো শেকল নয়, বরং এটি তাকে মুক্তার মতো সুরক্ষিত ও সম্মানিত রাখার একটি ঐশ্বরিক ব্যবস্থা।



