চট্টগ্রামজনদুর্ভোগদেশপরিবেশ

রাস্তাকে ডাস্টবিনে পরিণত করল মহল্লা কমিটি! চসিক নিষেধাজ্ঞা অমান্য-স্বাস্থ্যঝুঁকিতে হাজারো মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম নগরীর ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডের জনবহুল খালপাড় এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আবারও চলাচলের রাস্তায়,ময়লা-আবর্জনা ফেলেছে স্থানীয় মহল্লা কমিটি। এতে তীব্র দুর্গন্ধ, পরিবেশ দূষণ, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও ছাত্র-শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।

এলাকাবাসী জানান, গত ৫ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যায় রসুলবাগ সমাজকল্যাণ পরিষদের নির্দেশে অন্তত পাঁচটি ভ্যানগাড়িতে করে আবর্জনা এনে ফেলা হয় বায়তুল মামুর জামে মসজিদ, কবরস্থান ও নিকটস্থ আবাসিক বাড়ির সামনে। মুহূর্তেই পুরো এলাকা দুর্গন্ধে অসহনীয় হয়ে ওঠে।

এর আগে একই ঘটনায় গত ২৬ নভেম্বর স্থানীয় গ্রীন সিটি হাউজিং সোসাইটি, একর্ড গ্রীন ভিলেজ এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন—মহল্লা কমিটির কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আবাসিক রাস্তাকেই ‘স্থায়ী ডাস্টবিনে’ পরিণত করেছেন, যা জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

স্থানীয় নারী–শিশুরা বলেন, “স্কুলে যাওয়া-আসার সময় ভয়াবহ দুর্গন্ধে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। মশা, কুকুর, পচা পানি—সব মিলিয়ে বাস করা কঠিন হয়ে গেছে।”

এলাকাবাসীর অভিযোগ—বর্জ্যের পচা পানি খালে পড়ে জলাবদ্ধতা বাড়াচ্ছে। মসজিদে মুসল্লিদের যাতায়াত ব্যাহত হচ্ছে, কবরস্থানের পাশে ছড়িয়ে পড়ছে দূর্গন্ধ। জরুরি পরিস্থিতিতে অ্যাম্বুলেন্সও রাস্তা দিয়ে চলতে পারে না অনেক সময়।

চসিক পরিচ্ছন্নতা বিভাগ পূর্বেই এ রাস্তায় ময়লা ফেলা নিষিদ্ধ করে নোটিশ টানিয়েছিল। নির্ধারিত সংগ্রহ পয়েন্টও রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ—রসুলবাগ সমাজকল্যাণ পরিষদের কয়েকজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি নিজ সুবিধার জন্য নিয়ম ভেঙে আবর্জনা ফেলার নির্দেশ দেন।

পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীরা বলেন, “মানুষের বাড়ির গেটের সামনে বর্জ্যের পাহাড়—এটা কোনো সভ্য সমাজের চিত্র নয়।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এই প্রতিবেদককে কে বলেন,
নির্ধারিত পয়েন্ট ছাড়া কোথাও বর্জ্য ফেলতে দেওয়া হবে না। জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলা অমানবিক ও দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রভাবশালী যেই হোক—শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, পরিচ্ছন্নতা বিভাগকে জরুরিভিত্তিতে বর্জ্য অপসারণ ও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মসজিদ–কবরস্থানের পবিত্রতা নষ্ট হওয়া, পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button