ইসলাম ধর্মধর্ম ও জীবন

যে ৬টি আমলে মহান আল্লাহর দরবারে দ্রুত কবুল হয় দোয়া

ধর্ম ও জীবন ডেস্ক: দোয়া মুমিনের হাতিয়ার। মহান আল্লাহর কাছে বান্দার আর্তি জানানোর মাধ্যমই হলো দোয়া। তবে অনেক সময় আমরা হতাশ হয়ে পড়ি এই ভেবে যে, আমাদের দোয়া কবুল হচ্ছে না। ইসলামি স্কলারদের মতে, দোয়া কবুলের জন্য এর আদব বা শিষ্টাচার রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। এমন কিছু বিশেষ আমল ও কৌশল রয়েছে, যা অনুসরণ করলে আল্লাহ তায়ালা বান্দার ডাকে দ্রুত সাড়া দেন। দোয়া কবুলের এমন ৬টি কার্যকরী কৌশল নিচে তুলে ধরা হলো—

১. ভুল স্বীকার ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ: দোয়া শুরু করার অন্যতম আদব হলো নিজের গুনাহের কথা স্বীকার করা এবং আল্লাহর দেওয়া অগণিত নিয়ামতের জন্য শুকরিয়া আদায় করা। বিখ্যাত ‘সাইয়িদুল ইস্তিগফার’-এ এই বিষয়টি চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে, যেখানে বান্দা আল্লাহর অনুগ্রহ ও নিজের পাপ—উভয়ই স্বীকার করে নেয়।

২. তিনবার মিনতি করা: দোয়ার সময় কোনো কিছু চাইলে তা তিনবার পুনরাবৃত্তি করা সুন্নাহসম্মত। রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন কুরাইশদের বিরুদ্ধে বদদোয়া করেছিলেন, তখন তিনি তিনবার বলেছিলেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি কুরাইশদের পাকড়াও করুন।’ (বুখারি: ২৯৩৪, মুসলিম: ১৭৩৪)। বারবার চাওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি বান্দার নির্ভরতা প্রকাশ পায়।

৩. আল্লাহর ভয়ে অশ্রুপাত: বিনয় ও চোখের পানি দোয়া কবুলের অন্যতম মাধ্যম। হাদিসে এসেছে, নবীজি (সা.) একবার সূরা ইবরাহিম ও সূরা মায়েদার দুটি আয়াত তিলাওয়াত করে দুহাত তুলে কেঁদে ওঠেন এবং বলেন, ‘হে আল্লাহ! আমার উম্মত, আমার উম্মত।’ তখন আল্লাহ জিবরাইল (আ.)-কে পাঠান এবং অভয় দিয়ে বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি উম্মতের ব্যাপারে তোমাকে সন্তুষ্ট করব, তোমাকে কষ্ট দেব না।’ (মুসলিম: ২০২)। অর্থাৎ, চোখের পানি আল্লাহর রহমতকে ত্বরান্বিত করে।

৪. নেক আমলের ওসিলা: দোয়া করার আগে কোনো ভালো কাজ বা নেক আমল করে নেওয়া অত্যন্ত ফলপ্রসূ। যেমন—নামাজ পড়া, সদকা করা বা রোজাদারকে ইফতার করানো। নেক আমল মানুষকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে, ফলে সেই অবস্থায় দোয়া করলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বহুলাংশে বেড়ে যায়।

৫. পূর্ণ মনোযোগ ও বিশ্বাস: উদাসীন মনে দোয়া করলে তা কবুল হয় না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কবুল হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করো। জেনে রেখো, আল্লাহ তায়ালা অমনোযোগী ও উদাসীন অন্তরের দোয়া কবুল করেন না।’ (তিরমিজি: ২৪৭৯)। তাই কায়মনোবাক্যে আল্লাহর দিকে রুজু হতে হবে।

৬. দোয়ার ইতিটানা: দোয়া শেষ করার সময় আল্লাহর মহিমা ও গুণবাচক নাম উল্লেখ করা উচিত। যেমন—রিজিক চাইলে ‘ইয়া রাজ্জাক’ বা ক্ষমা চাইলে ‘ইয়া গাফুরুর রাহিম’ বলে দোয়া শেষ করা। দোয়ার বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল রেখে আল্লাহর গুণবাচক নামের উল্লেখ দোয়াটিকে আরও শক্তিশালী ও অর্থবহ করে তোলে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button