চট্টগ্রামজনদুর্ভোগজাতীয়

আনোয়ারা-কর্ণফুলীতে এনআইডি সেবা কার্যক্রম অচল, অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে কর্মচারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের এক দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেছেন নির্বাচন কমিশনের আইডিইএ (IDEA) প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর জেরে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাচন অফিসের সব ধরনের সেবা কার্যক্রম কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। কর্মকর্তারা অফিসে উপস্থিত থাকলেও কলমবিরতি পালন করায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শত শত সেবাগ্রহীতা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই দুই উপজেলার নির্বাচন অফিসের সামনে ভিড় করেন নতুন ভোটার হতে আসা শিক্ষার্থী, এনআইডি সংশোধন ও স্মার্টকার্ড প্রত্যাশীরা। কিন্তু কাউন্টারে গিয়ে তারা দেখেন কার্যক্রম বন্ধ।

আন্দোলনরতরা জানান, ২০০৭-২০০৮ সালে পিইআরপি ও ফিনডিক প্রকল্পের আওতায় ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও বায়োমেট্রিক ডাটাবেজ তৈরির কাজ দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু। দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে তারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে এনআইডি সার্ভার রক্ষণাবেক্ষণ ও নাগরিকদের সেবা দিয়ে আসছেন। অথচ অভিজ্ঞ এই জনবলকে এখনো স্থায়ী নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

কর্মচারীদের অভিযোগ, ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট একই দাবিতে তারা মানববন্ধন করেছিলেন। তখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিলেও গত এক বছরেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। প্রকল্পের মেয়াদ আর মাত্র এক বছর বাকি। এরপর চাকরি স্থায়ী না হলে বেশিরভাগ কর্মীর চাকরির বয়সসীমা শেষ হয়ে যাবে, ফলে পরিবার নিয়ে তাদের পথে বসা ছাড়া উপায় থাকবে না।

সেবা না পেয়ে ফিরে যাওয়ার সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ মানুষ। স্মার্টকার্ড সংশোধন করতে আসা মো. ইমন বলেন, ‘‘চাকরির আবেদনের জন্য কার্ড সংশোধন খুব জরুরি। কিন্তু এখানে এসে দেখি ধর্মঘট চলছে। এখন কী করব বুঝতে পারছি না।’’ বিদেশগামী এক যুবক জানান, পাসপোর্টের জন্য এনআইডি প্রয়োজন, কিন্তু সেবা বন্ধ থাকায় তিনি বড় ধরনের বিপদে পড়েছেন।

কর্মচারীরা বলছেন, নতুন করে জনবল নিয়োগ দিলে তাদের প্রশিক্ষণ ও কাজে অভ্যস্ত হতে অনেক সময় ও অর্থের অপচয় হবে। তাই অভিজ্ঞদের আত্মীকরণ করাই রাষ্ট্রের জন্য লাভজনক।

এ বিষয়ে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু জাফর মোহাম্মদ ছালেহ এবং কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাহিদা বিনতে আশরাফ জানান, আইডিইএ প্রকল্পের কর্মীদের কর্মবিরতির কারণে স্বাভাবিক সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তবে বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়, তাই স্থানীয়ভাবে তাদের কিছু করার নেই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button