নিজস্ব প্রতিবেদক, পঞ্চগড়: স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে চড়ে যাচ্ছিলেন গন্তব্যে। কিন্তু মহাসড়কের ওপর অপরিকল্পিত গতিরোধকই (স্পিড ব্রেকার) কাল হলো তাদের জন্য। গতিরোধকে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে সড়কে পড়ে যান স্ত্রী। ঠিক সেই মুহূর্তেই পেছন থেকে আসা একটি ট্রাক তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান স্কুলশিক্ষিকা রিনা আক্তার (৪৫)। এ ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার স্বামী ও মাদরাসা সুপার সাইফুল ইসলাম (৫৩)।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সংলগ্ন এলাকায় এই হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত রিনা আক্তার দেবীগঞ্জ উপজেলার মুন্সীপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দেবীগঞ্জ শেখবাঁধা রেয়াজিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার সাইফুল ইসলাম তার স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে পঞ্চগড় জেলা শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। বিজিবি ক্যাম্পের সামনে রাস্তায় থাকা একটি স্পিড ব্রেকারে মোটরসাইকেলটি সজোরে ধাক্কা খায়। এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই রাস্তায় ছিটকে পড়েন। এ সময় একটি দ্রুতগামী ট্রাক রিনা আক্তারকে চাপা দিলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা মরদেহ উদ্ধার করেন।
এদিকে, এই মর্মান্তিক ঘটনার পর স্থানীয় জনতা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ স্পিড ব্রেকার অপসারণের দাবিতে তারা প্রায় এক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কাজী মো. সায়েমুজ্জামান এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা অবরোধ তুলে নেন।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম জানান, ঘাতক ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে এবং এ ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।



