Uncategorizedইসলাম ধর্মধর্ম ও জীবন

জিন-জাদু থেকে সুরক্ষা ও অফুরন্ত বরকত

ইসলামিক বিচিত্রা ডেস্ক: পবিত্র কুরআনের দীর্ঘতম ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা হলো সূরা আল-বাকারা। এই সূরাটি কেবল আয়াতের দিক থেকেই বিশাল নয়, বরং এর ফজিলত ও বরকত মুমিনের জীবনের জন্য এক বড় রক্ষাকবচ। বিশেষ করে জিন ও শয়তানের প্রভাব থেকে বাঁচতে, জাদু টোনা নষ্ট করতে এবং বদনজর থেকে রক্ষা পেতে সূরা বাকারার আমল অত্যন্ত কার্যকরী। এর শেষ দুই আয়াতের (২৮৫-২৮৬) মাহাত্ম্য সম্পর্কে হাদিসে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

হাদিস শরিফে এসেছে, যে ব্যক্তি সূরা বাকারা পাঠ করে, শয়তান তার ঘর থেকে পালিয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘‘তোমরা সূরা বাকারা পাঠ করো। কারণ, তা আঁকড়ে ধরায় বরকত রয়েছে এবং ছেড়ে দেওয়ায় রয়েছে আক্ষেপ। আর জাদুকররা এর সামনে টিকতে পারে না।’’

ইসলামি চিন্তাবিদদের মতে, সূরা বাকারার আমল আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় ক্ষেত্রেই কল্যাণ বয়ে আনে।
১. জিন ও জাদুর প্রভাব নাশ: নিয়মিত এই সূরা তিলাওয়াত করলে জিন ও শয়তানের কুপ্রভাব দূর হয় এবং জাদু অকার্যকর হয়ে যায়।
২. কিয়ামতের মাঠে সুপারিশ: কিয়ামতের ভয়াবহ দিনে সূরা বাকারা ও সূরা আলে-ইমরান পাঠকারীর পক্ষে আল্লাহর দরবারে সুপারিশ করবে।
৩. আধ্যাত্মিক সুরক্ষা: এটি মুমিনের জন্য একটি আধ্যাত্মিক ঢাল হিসেবে কাজ করে, যা আত্মিক প্রশান্তি দান করে।

সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াতকে (আমানার রাসুলু…) উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ উপহার বলা হয়েছে। এর ফজিলত সম্পর্কে বলা হয়:

  • আরশের নিচের ভান্ডার: এই দুটি আয়াত আল্লাহ তায়ালা তার আরশের নিচের বিশেষ ভান্ডার থেকে দান করেছেন।
  • তাহাজ্জুদের সওয়াব: হাদিসে এসেছে, কেউ যদি রাতে ঘুমানোর আগে এই দুই আয়াত পাঠ করে, তবে তা তার জন্য ‘যথেষ্ট’ হবে। মুহাদ্দিসিনে কেরাম ব্যাখ্যা করেছেন যে, এটি তাহাজ্জুদ নামাজের সমপরিমাণ সওয়াব কিংবা সারারাতের ইবাদতের জন্য যথেষ্ট হতে পারে।
  • দোয়া কবুল: এই আয়াতের মধ্যে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ দোয়া রয়েছে, যা কবুল হওয়ার ওয়াদা আল্লাহ তায়ালা করেছেন।

রাসূল (সা.) এই আয়াতগুলো সম্পর্কে বলেছেন, এটি এমন একটি দরজা দিয়ে নাজিল হয়েছে যা আগে কখনো খোলা হয়নি। তাই প্রতিদিনের আমলে, বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করা মুমিনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এটি একদিকে যেমন ইমানি শক্তি বৃদ্ধি করে, অন্যদিকে শয়তানি ধোঁকা ও বিপদাপদ থেকে হেফাজতে রাখে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button