
মুহাম্মদ জুবাইর: চট্টগ্রামের উন্নয়নে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবকে প্রধান অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘‘এক সংস্থা রাস্তা তৈরি করে, আর কদিন পরই আরেক সংস্থা এসে তা কেটে ফেলে। এভাবে কোনো টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। এই বিশৃঙ্খলা দূর করে পরিকল্পিত ও বিনিয়োগবান্ধব চট্টগ্রাম গড়তে ‘নগর সরকার’ ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই।’’
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর ২০২৫) নগরীর টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন মার্কিন দূতাবাসের পলিটিক্যাল-ইকোনমিক কাউন্সেলর এরিক গিলান এবং পলিটিক্যাল অ্যানালিস্ট ফিরোজ আহমেদ।
মেয়র ডা. শাহাদাত বলেন, বর্তমানে সেবা সংস্থাগুলো বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে। যদি নগর সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয় এবং মেয়রকে প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা দেওয়া হয়, তবে একক নেতৃত্বের অধীনে সব সংস্থার কাজের সমন্বয় করা সহজ হবে। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে মার্কিন প্রতিনিধিদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি সেনাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে নগরীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। চট্টগ্রামকে একটি ‘সেফ সিটি’ হিসেবে গড়ে তুলতে পুরো নগরীকে ধাপে ধাপে সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারিতে আনার একটি বৃহৎ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া চট্টগ্রামকে ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি সিটি হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীদের জন্য হেলথ কার্ড, ব্যস্ততম মোড়গুলোতে ব্রেস্টফিডিং কর্নার, নিম্নআয়ের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কেনার স্মার্ট কার্ড এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’
দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রসঙ্গে মেয়র মন্তব্য করেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থায়ী উন্নয়ন সম্ভব নয়।
মতবিনিময় সভায় চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল ও রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাব্বির রহমান সানি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



