২০ লাখ টাকার চুক্তিতে ইতালি যাত্রা: বিমানবন্দরে ধরা পড়ল ভুয়া ভিসা, সিআইডির জালে প্রতারক
নিজস্ব প্রতিবেদক: ছেলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় শেষ সম্বলটুকু তুলে দিয়েছিলেন দালালদের হাতে। কথা ছিল ইতালি পৌঁছে বাকি টাকা পরিশোধ করবেন। স্বপ্নপূরণের লক্ষে সন্তানকে বিমানবন্দরে বিদায় জানিয়ে বাইরে অপেক্ষাও করছিলেন বাবা। কিন্তু ইমিগ্রেশন পার হওয়ার আগেই জানা গেল, পাসপোর্টে লাগানো ভিসাটি আসলে জাল। নিমিষেই ধূলিসাৎ হয়ে গেল বাবা-ছেলের রঙিন স্বপ্ন।
চাঞ্চল্যকর এই ভিসা জালিয়াতি চক্রের অন্যতম সদস্য মাহবুবুর রহমানকে (৩০) গত ৩ ডিসেম্বর ঢাকার খিলক্ষেত থেকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি ঢাকা-মেট্রো পূর্ব ইউনিট। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সিআইডি এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ফরিদপুরের তরুণ মো. সাইফুল মিয়াকে (২১) ইতালি পাঠানোর কথা বলে তার বাবা মো. বিল্লাল মিয়ার (৬৩) সঙ্গে ২০ লাখ টাকার চুক্তি করে একটি চক্র। বিশ্বাস অর্জনের জন্য গত ৬ মার্চ ২০২৫ তারিখে নগদ ৫ লাখ টাকা এবং ২ হাজার ১০০ ইউরো (প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা) গ্রহণ করে চক্রটি। শর্ত ছিল, বাকি টাকা ইতালি পৌঁছানোর পর দেওয়া হবে।
টাকা পাওয়ার পর সাইফুলের পাসপোর্টে একটি ভিসা লাগিয়ে গত ২২ এপ্রিল তাকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাঠায় দালালেরা। কিন্তু ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ধরা পড়ে ভিসাটি ভুয়া। তাৎক্ষণিকভাবে প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে টাকা ফেরত চাইলে উল্টো ভুক্তভোগী পরিবারকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে চক্রটি।
এ ঘটনায় গত ২ জুলাই পল্টন থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী বাবা। তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর এই চক্রের হোতা জোসনা খাতুন ও তার সহযোগী মিলন মিয়াকে ঢাকা ও ফরিদপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সবশেষ ৩ ডিসেম্বর গ্রেফতার হন মাহবুবুর রহমান।
সিআইডি জানায়, গ্রেফতারকৃত মাহবুবকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং চক্রের অন্য পলাতক সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।



