অন্যান্যঅপরাধঢাকা বিভাগবাংলাদেশ

অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ ক্যাডারকে বাঁচাতে কলেজ অধ্যক্ষের নিকট উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ক্ষমাপ্রার্থনা

স্টাফ রিপোর্টার, অপরাধ বিচিত্রা অনলাইন : ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার কামারগ্রামে অবস্থিত আলফাডাঙ্গা আদর্শ কলেজে প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিয়ে অধ্যক্ষসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতা আল সাদের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার কলেজে ডিগ্রি পরীক্ষা চলাকালে ভয়াবহ এই ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, অভিযুক্ত আল সাদ হাতে রামদা নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে প্রকাশ্যে মহড়া দেয়। এ সময় সে অধ্যক্ষ এম এম মজিবুর রহমান মুজিবসহ একাধিক শিক্ষককে উদ্দেশ করে হুমকিমূলক বক্তব্য দেয়। উদ্দেশ্য ছিল কলেজ প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে ভয়ভীতি দেখানো।

অভিযুক্ত আল সাদ আওয়ামী ক্যাডার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। আনোয়ার হোসেন ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ১৩ আগস্ট আলফাডাঙ্গায় আওয়ামী লীগের পক্ষে অনুষ্ঠিত অস্ত্র মিছিলে প্রকাশ্যে নেতৃত্ব দেন। স্থানীয়দের তথ্যমতে, সে সময় তিনি আওয়ামী লীগের সক্রিয় ক্যাডার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতে রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন করে বর্তমানে তিনি ফরিদপুর–১ আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী, কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম নাসিরের অনুসারী হিসেবে এলাকায় সক্রিয় রয়েছেন।

হঠাৎ এই ঘটনায় ডিগ্রি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক পরীক্ষার্থী ভয়ে স্বাভাবিকভাবে পরীক্ষা দিতে পারেননি। শিক্ষক-কর্মচারীরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজ অধ্যক্ষ এম এম মজিবুর রহমান মুজিব বলেন, “আল সাদ প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করে কলেজের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করেছে। আমাদের ভীতি প্রদর্শন করে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছে।”

এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আল সাদের পক্ষে কলেজ অধ্যক্ষের কাছে মৌখিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মান্নান মিয়া আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান খসরু। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় দুটি পদে থাকা নেতারা একজন ছাত্রলীগ নেতার পক্ষে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাওয়ায় অভিভাবক, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট মহল বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এবং বিষয়টিকে অস্বাভাবিক ও প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button