নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষা নদীর দূষণ বন্ধে ইটিপি ছাড়া পরিচালিত শিল্পের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা আগামী ২৫ শে ফেব্রুয়ারির মধ্যে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট

অপরাধ বিচিত্রা ডেক্স : শীতলক্ষা নদীর দূষণ বন্ধে ব্যবস্থা নিতে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ
এর দায়েরকৃত রিট মামলায় আদালত কর্তৃক ইতিপূর্বে রুল জারি করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
কোন প্রতিবেদন না আসায় এইচ আর পি বি এর পক্ষে একটি সম্পূরক আবেদন দাখিল করে আদালতে নির্দেশনা প্রার্থনা করেন। শুনানি শেষে আদালত বিআইডব্লিউটিএ এর চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে আদালতের নির্দেশনার ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানাতে বলেন। বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের পক্ষে গত কাল প্রতিবেদন দাখিল করে অব্যাহতির আবেদন জানালে আদালত মঞ্জুর করে আজ শুনানির জন্য রাখেন। বিচারপতি ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি মোহাম্মদ আসিফ হাসান এর আদালতে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজ সশরীরে হাজির হয়ে প্রতিবেদন দাখিল করলে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয় শীতলক্ষা নদীতে অনেক ইন্ডাস্ট্রি সরাসরি বর্জ্য ও অপরিশোধিত পানি ফেলে দূষণ চলছে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় ১১৭ টি ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে মাত্র ১৮ টি শিল্পের ইটিপি রয়েছে।
এইচ আর পিবির পক্ষে একটি আবেদন দাখিল করে শীতলক্ষ্যার তীরে ইটিপি ছাড়া পরিচালিত ৯৯ টি ইন্ডাস্ট্রি এর দ্রুত গ্যাস লাইন ও বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আবেদন জানান। আদালত শুনানি শেষে মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত হাজিরা অব্যাহতি দেন। আদালত অপর এক আদেশে বিআইডব্লিউটিএ এবং পরিবেশ অধিদপ্তর কে ২৫ শে ফেব্রুয়ারি ২০২৬ এরমধ্যে যে সকল ইটিপি ব্যবহার করছে না তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ইস্যুকৃত নোটিসের ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ কি নেয়া হয়েছে তা জানানোর জন্য নির্দেশ দিয়ে পরবর্তী শুনানি ২৫ শে ফেব্রুয়ারি ২০২৬ নির্ধারণ করেন।
শুনানিতে রিটকারি পক্ষের কৌশলী সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ বলেন পরিবেশ আইন ও বিধি অনুসারে লাল লাল শ্রেণি অন্তর্ভুক্ত শিল্প ইটিপি ছাড়া চলতে পারে না কিন্তু দাখিলকৃত প্রতিবেদন অনুসারে দেখা যায় প্রায় ৯৯ টি শিল্প কারথানা ইটিপি ছাড়া পরিচালনা করে শীতলক্ষ্যা নদীর দূষণ করছে। তিনি আদালতে আরো বলেন আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হলে যেকোনো সময় আদালত যথাযথ আদেশ দিতে পারেন এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ সকল ইন্ডাস্ট্রির বর্জ্য ও কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি শীতলক্ষায় ফেলা অব্যাহত থাকলে এক ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটবে। তিনি আরো বলেন এ ধরনের আবেদন এর বিরোধিতা পরিবেশ অধিদপ্তর এর করার কথা না কিন্তু তা সত্বেও পরিবেশ অধিদপ্তরের আইনজীবী বলছেন ইটিভি ছাড়া যেগুলো চলছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চলমান আছে। উত্তরে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ বলেন যেখানে আইনে নির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে ইটিপি ছাড়া শ্রেণীর ইন্ডাস্ট্রি চলতে পারবে না সেখানে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে আমাদের আবেদন বিরোধিতা করা এক ধরনের আইন প্রয়োগে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা।
তিনি আরো বলেন গত সরকারের সময় বুড়িগঙ্গা দূষণে শ্যামপুর এরিয়ায় ইটিপি ছাড়া শিল্প বন্ধে পরিবেশের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও ভূমিকা আইনজীবী রেখেছেন কিন্তু বর্তমানে ব্যতিক্রমটা পরিবেশ রক্ষায় সহায়ক নয়। তিনি আদালতে আরো বলেন ব্যক্তিগত হাজিরা দেওয়ার আবেদন জানানোর উদ্দেশ্য হলো যাতে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে শীতলক্ষার দূষণ বন্ধ হয়। রিট পিটিশনার হলেন এইচ আর পি বি এর পক্ষে এডভোকেট মোহাম্মদ সারোয়ার আহাদ চৌধুরী এবং বিবাদীরা হলেন পরিবেশ অধিদপ্তর, বিআই ডব্লিউটিএ সহমোট ১৫ জন
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ। বিআইডব্লিউটিএর পক্ষে এডভোকেট মোখলেছুর রহমান এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে এডভোকেট মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ।



