প্রশাসনের নাকের ডগার উপর দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা মামলার আসামী নৃত্য পরিচালক হাবিবুর রহমান হাবিব

নিজস্ব প্রতিবেদক : হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা, হুমকি ও চাঁদাবাজি মামলার আসামী হয়েও প্রশাসনের নাকের ডগার উপর দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে চলচ্চিত্রের নৃত্য পরিচালক হাবিবুর রহমান হাবিব ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা৷ ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ও ভয়ংকর সন্ত্রাসী হওয়াতে ফ্যাসিবাদ আমলে পুলিশ হাবিব ও তার সহযোগীদের টিকিটি পর্যন্ত ছুঁতে পারেনি৷ হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ, ভাংচুর ও চাঁদাবাজির মামলার এক যুগ অতিবাহিত হলেও হাবিবুর রহমান হাবিব ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মামলার বাদী কুড়িগ্রামের চিলমারীর মোঃ আমজাদ হোসেন।
হাবিবুর রহমান হাবিব ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলার শিকার মো: আমজাদ হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে এই প্রতিবেদককে বলেন, ২০১৩ সালের ২৮ মে বিকাল তিনটার দিকে হাবিবুর রহমান হাবিব ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের বিএনপি কর্মীদের উপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে।
মামলার এজাহারে বাদী আমজাদ হোসেন উল্লেখ করেন, বিএনপির দলীয় প্রোগ্রাম শেষে নেতা-কর্মীদের নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মৌজাথানা ছোটকুষ্টারী গ্রামস্থ ঢাকাগামী নাইট কোচ সংলগ্ন বিআরটিসি কাউন্টারের সামনে পাকা সড়কের উপর পৌঁছা মাত্রই উক্ত আসামী হাবিবের নেতৃত্বে অপরিচিত ২০/২৫ জন আসামী হাতে ছোরা, দা-বেকি, চাইনিজ কুড়াল, লোহার রড, হকষ্টিক, আগ্নেঅস্ত্র ও সুলপি সহ প্রভৃতি মারাত্মক দেশিয় ধারালো অস্ত্রে-সস্ত্রে সু-সজ্জিত হয়ে আমাদেরকে চারিদিকে ঘিরে ফেলে। একপর্যায়ে আসামীগন তাদের কাছে নগদ ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদা না দিয়ে কিভাবে দলীয় প্রোগ্রাম করবে সেটা আমরা দেখে নিবো এমন হুমকিও প্রদান করে।
মামলার বাদী আমজাদ হোসেন এই প্রতিবেদককে জানান, স্বৈরাচারের দোসর হাবিবুর রহমান হাবিব রাজধানীতে নৃত্য পরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকাতে সে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এখনো মুক্তবিহঙ্গের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। আওয়ামী লীগের আমলে উপর মহলে হাবিবের হাই কানেকশন থাকাতে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা ও চাঁদাবাজির মামলার আসামী হয়েও সে “নো টেনশান ভাব” নিয়েই রাজধানী ও চলচ্চিত্র অঙ্গন চষে বেড়াচ্ছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে আমজাদ হোসেন বলেন, কাওরান বাজারে আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা মামলার আসামী কানাডায় পলাতক চিত্রনায়ক জায়েদ খান ও আলো আসবেই গ্রুপের সদস্য, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধীতাকারী, ছাত্রহত্যার উস্কানিদাতা হত্যা মামলার আরেক আসামী ফ্যাসিবাদের দোসর চিত্রনায়ক সায়মন সাদিক আমেরিকায় পালিয়ে গেলেও তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী নৃত্য পরিচালক হাবিব রাজধানীতে তার কর্মকান্ড দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছে। এব্যাপারে প্রশাসনিক কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি।
দীর্ঘ ১২ বছর পার হলেও পুলিশ কেন হাবিবুর রহমান হাবিব ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের গ্রেফতার করছেনা এমন প্রশ্নে মামলার বাদী আমজাদ হোসেন জানান, ২০১৩ সালের সেই বর্বরোচিত ঘটনার পর হাবিব আর তার সহযোগীদেরকে কুড়িগ্রামে দেখা যায় নি। রাজধানীতে অবস্থান করাতে কুড়িগ্রামের পুলিশ হাবিব ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করতে পারছেনা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আমজাদ হোসেন।
নৃত্য পরিচালকের সাইনবোর্ডে দুর্ধর্ষ হাবিব নিজেকে আড়াল করে রেখেছে বলেও তিনি জানান।
নৃত্য পরিচালক হাবিবুর রহমান হাবিবকে নিয়ে অনুসন্ধানে কেঁচো খুড়তে অজগর বেরিয়ে আসে।
চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, রাজধানীর মগবাজারের বিশাল সেন্টারের ছাদে নাচের একাডেমি চালু করে দিব্যি আরাম আয়েশে দিনযাপন করছেন।
হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা ও চাঁদাবাজির মামলায় এই নৃত্য পরিচালকের সাথে অন্য আসামীরা হলেন তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী কুড়িগ্রামের মৌজাথানা মাটিকাটা মোড়ের মোঃ আঃ রাজ্জাক মিলন (৪৫), মসজিদের পাড় মোড়ের মোঃ হাফিজুর রহমান, সোনারপাড়ার মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু (৫২), পুটিমারির মোঃ মাসুদ রানা (৩২) নালারপাড়ের মোঃ সাইদুর রহমান (৪৫), খরখরিয়া মন্ডলপাড়ার মোঃ ফিরোজ মিয়া, মোঃ গওছুল আজম, মোঃ আমিনুল কাজি (৪৮), মোঃ আবু ওয়ারেছ (৪০), মোঃ সোহরাব হোসেন (৫২), মোঃ ফরহাদ দেওয়ানী (৫৮), মোঃ আল আমিন (৪০), মোঃ রেজাউল করিম লিচু (৪৩), মোঃ চাঁন চৌধুরী (৫৫), মোঃ আঃ হামিদ (৫৫), মোঃ লুৎফর রহমান (৫৬), মোঃ আঃ করিম (৪৫), মোঃ নুরুজ্জামান আজাদ জামান (৪৫), মোঃ বাদশা মিয়া (৫০), মোঃ আঃ বারী (৫২), মোঃ শাওন মিয়া (৩৫), মোঃ মাহবুবুর রশিদ বিপ্লব (৪৬), মোঃ মিনহাজুল ইসলাম নিলু (৪০) প্রমুখ।
এছাড়াও পেনাল কোডের ৫০০/১০৯ ধারায় ২০২৪ সালের ১৫ মে নৃত্য পরিচালক হাবিবুর রহমান হাবিবের নামে কুড়িগ্রামের উলিপুরে আরো একটি মামলা দায়ের করেছেন সেখানকার স্থানীয় এক সাংবাদিক।



