বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা ও অপরাধ বিচিত্রা: একজন কলম সৈনিকের জবানবন্দি

সাংবাদিকতা কেবল একটি পেশা নয়, বরং এটি সমাজ পরিবর্তনের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। নৈতিকতা, দায়বদ্ধতা এবং সত্য প্রকাশের অদম্য সাহসের নামই সাংবাদিকতা। একজন গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যেই আমি কাজ করে যাচ্ছি।
আর এই লক্ষ্য পূরণে সঠিক প্ল্যাটফর্ম বেছে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সেই তাড়না থেকেই আমি আমার সাংবাদিকতার ঠিকানা হিসেবে বেছে নিয়েছি ‘অপরাধ বিচিত্রাথকে।
দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। তবে ‘অপরাধ বিচিত্রাথয় যুক্ত হওয়াটা আমার জন্য সহজ ছিল না। চট্টগ্রাম ব্যুরো চিফের মাধ্যমে দীর্ঘ তিন বছর প্রচেষ্টার পর অবশেষে এই স্বনামধন্য পত্রিকায় কাজ করার সুযোগ পাই।
এখানে যুক্ত হওয়ার পর থেকে পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আলহাজ্ব এস এম মোরশেদ স্যারের সান্নিধ্যে এসে সাংবাদিকতার প্রকৃত নীতি ও নৈতিকতা সম্পর্কে নতুন করে শিখতে পেরেছি।আমি মনে করি, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ‘অপরাধ বিচিত্রাথর কোনো বিকল্প নেই। আমার সম্পাদক এস এম মোরশেদ কেবল একজন প্রতিষ্ঠান প্রধানই নন, তিনি সাংবাদিকদের জন্য একজন আদর্শ শিক্ষক।
তাঁর সাহসিকতা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থান আমাকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত করে। বাংলাদেশের হাজারও জাতীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদকরা যদি তাঁর মতো সাহসিকতার সঙ্গে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে কলম ধরতেন, তবে জাতি আরও বেশি উপকৃত হতো।কেন আমি এই পত্রিকাকে বেছে নিলাম, তার পেছনে কিছু সুনির্দিষ্ট কারণ ও দর্শন রয়েছে।
সামাজিক দায়বদ্ধতা ও সত্য প্রকাশ :
সাংবাদিকতার মূল মন্ত্র হলো সত্য তথ্যের মাধ্যমে সমাজকে সচেতন করা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। অপরাধ বিচিত্রা এই নীতিতে অটল। এটি কেবল সমাজের ভুলত্রুটিই তুলে ধরে না, বরং দেশের উন্নয়ন এবং ইতিবাচক দিকগুলোও সমান গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করে। উন্নয়নমূলক সাংবাদিকতার এই চর্চা আমাকে মুগ্ধ করেছে। এখানে কাজ করাকে আমি কেবল চাকরি নয়, বরং একটি সামাজিক দায়িত্ব বলে মনে করি।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ও বস্তুনিষ্ঠতা:
একটি নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যম হিসেবে অপরাধ বিচিত্রা সব সময় বস্তুনিষ্ঠতার ওপর জোর দেয়। শতভাগ অনুসন্ধান ছাড়া এখানে কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয় না। ফলে অপরাধীদের প্রকৃত ‘আমলনামাথ তথ্য-প্রমাণসহ জাতির সামনে তুলে ধরা সম্ভব হয়। গত ৩০ বছর ধরে এই পত্রিকা সাহসিকতার সঙ্গে অপরাধীদের মুখোশ উন্মোচন করে আসছে।
পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন:
দীর্ঘ তিন দশকের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই প্রতিষ্ঠানে কাজের পরিবেশ অত্যন্ত পেশাদার। এখানে রিপোর্টিং, এডিটিং এবং সংবাদ বিশ্লেষণের পাশাপাশি আধুনিক সাংবাদিকতার নানা কৌশল শেখার সুযোগ পেয়েছি । বিশেষ করে মোবাইল জার্নালিজম, ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংবাদ উপস্থাপনের সুযোগ একজন সাংবাদিকের দক্ষতাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। রাজনীতি, অর্থনীতি ও অপরাধ জগতের সংবাদ নিয়ে কাজ করতে গিয়ে নিজের জ্ঞানের পরিধিও বৃদ্ধি পায়, এক মাত্র প্রতিষ্ঠান অপরাধ বিচিত্রা ।
শোষিতের পক্ষে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে:
আমি দেখেছি, অপরাধ বিচিত্রা সব সময় নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে থাকে। ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ, কালোবাজারি, প্রতারক, সন্ত্রাসী কিংবা গডফাদার—কারও সঙ্গেই এই পত্রিকা আপস করে না। আমার শিক্ষাগুরু এস এম মোরশেদ স্যার সব সময় নির্দেশ দেন, সঠিক তথ্য সংগ্রহের প্রকাশ করা। নানান মাধ্যমে অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করতে তিনি একমাত্র উৎসাহ দাতা হিসেবে আমি পেয়েছি ।
এই “অপরাধ বিচিত্রা”র আরেকটি বড় গুণ হলো অভ্যন্তরীণ স্বচ্ছতা। সম্পাদক মহোদয় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রতিনিধি যদি অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন, তবে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে স্বজনপ্রীতির কোনো স্থান নেই।পরিশেষে বলতে চাই, যারা প্রতারণা ও অপশক্তির ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না, তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
তিনি সবসময় বলেন আমাদের এক ঝাঁক আপসহীন কলম সৈনিক আপনাদের পাশে আছে। উপযুক্ত প্রমাণসহ আমাদের কাছে আসুন, আমরা আপনাদের কথা তুলে ধরব। দুর্নীতি প্রতিরোধ করে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। যতদিন সাংবাদিকতা পেশায় থাকব, ‘অপরাধ বিচিত্রাথর এই আদর্শকে ধারণ করেই পথ চলব আর সেই কারণেই অপরাধ বিচিত্রা ছাড়া আমার আর কোন পত্রিকায় কাজ করার আগ্রহ জাগে না ।
লেখক: সাংবাদিক .



