বাংলাদেশ মানবধিকার উন্নয়ন ফাউন্ডেশনর আন্তজাতিক মানবধিকার দিবস ২০২৫ পালন মানবাধিকার লঙ্ঘন ঠেকাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: মেয়র

এম এ মান্নান : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বিগত সময়ে মিথ্যা হয়রানি মূলক মামলা দিয়ে চরম মানবধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধ করতে হলে রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সবার আন্তরিক অংশগ্রহণ অপরিহার্য। যে সমাজে বৈষম্য, সহিংসতা ও দমনপীড়ন প্রতিরোধে সম্মিলিত উদ্যোগ থাকে, সেই সমাজেই মানবাধিকার সুরক্ষিত থাকে।
তিনি বুধবার চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বাংলাদেশ মানবধিকার উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এডভোকেট মো. জাফর হায়দারের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত মহাসচিব নুর উদ্দীন খান সাগরের সঞ্চালনায় ৭৭ তম আন্তজাতিক মানবধিকার দিবস ২০২৫ উপলক্ষে র্যালী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, মানবাধিকার রক্ষা কেবল সরকারের দায়িত্ব নয়, প্রতিটি সচেতন নাগরিকেরও এটি নৈতিক কর্তব্য। সমাজের দুর্বল ও বঞ্চিত মানুষের অধিকার নিশ্চিতে সম্মিলিত সামাজিক দায়িত্ববোধ তৈরিই টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি।
মেয়র আরও বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন তখনই বৃদ্ধি পায়, যখন নাগরিকরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে নীরব থাকে। ন্যায়, সমতা, মানবিকতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সবাইকে সচেতন হতে হবে পরিবারে, কর্মক্ষেত্রে, সমাজে এবং প্রশাসনে। তিনি চসিকের কর্মপরিধিতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং মানবিক সেবা উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানান।
আলোচনা সভায় উদ্ভোধক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশনস্) মোঃ হুমায়ুন কবির। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল হক ভূইয়া। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও গবেষক আমিনুরর রসুল বাবুল, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা এডভোকেট আশরাফী বিনতে মোতালেব, টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব বেলায়েত হোসেন, বেস্ট ই-কর্মাস প্ল্যাটফর্মের ফাউন্ডার এডমিন রোকসানা রলি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের মহাসচিব মহিউদ্দিন স্বপন, ভাইস চেয়ারম্যান আবু হানিফ, নগরের আহবায়ক আবু হানিফ মাসুদ, গোলাম ছরোয়ার, ওমর ফারুক চৌধুরী, নাছির উদ্দীন জসীম, অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট জসীম উদ্দীন, অতিরিক্ত জিপি এডভোকেট মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, জেলা বারের সাবেক আইটি সম্পাদক এডভোকেট রাশেদ চৌং, নারী নেত্রী বিলকিছ বেগম, হ্যাপী, জুই, কুলসুমা, মানবধিকার সংগঠক বেলাল আহমেদ, জাকির হোসেন, মুন্না, ডাঃ রবিউল, আবদুর রহমান সবুজ, কাজী আবদুস সোবাহান, জাহাঙ্গীর হোসেন, নেজাম উদ্দিন, মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, আনোয়ার হোসেন, জুলাই যোদ্ধা মোহাম্মদ বেলাল চৌং, রাজু, মোহাম্মদ হাসান, মোঃ সেলিম, রিনা বেগম, নুরুল হক নুরুসহ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ ঘোষিত সর্বজনীন ঘোষনার ত্রিশটি অনুচ্ছেদ পালন অঙ্গীকারবদ্ধ। ইতিমধ্যে মানবধিকার সংক্রান্ত জাতিসংঘের নয়টি মূল আর্ন্তজাতিক চুক্তির সবগুলোতে বাংলাদেশ যোগ দিয়েছে যার সর্বশেষটি হলো- গুম বিষয়ক আর্ন্তজাতিক কনভেশন। যুক্ত আছে আর্ন্তজাতিক শ্রম সংস্থার সব মূল কনভেনশনে যা শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে সহায়ক।
উদ্ভোধক হুমায়ন কবির বলেন মানবধিকার এর প্রকৃত চেতনা ধারণ করতে হবে। আমাদের চারপাশে নানা সমস্যা রয়েছে। সমাজের বিত্তবানদের দরিদ্রশ্রেণীর পাঁশে দাড়াতে হবে। মানবধিকার সংগঠন গুলো মিডিয়া কভারেজ এর চাইতে মানব কল্যাণে আরও জোরালো ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে এডভোকেট জাফর হায়দার বলেন, অসাম্য দূর করে, মানবধিকার সুরক্ষা করতে সকলের সম্মেলিত প্রচেষ্টা আবশ্যক। দিবসের তাৎপর্য্য ও গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্য হলো, আমরা কতটুকু মানবধিকার সমুন্নত রাখতে সক্ষম হয়েছি তা পর্যালোচনা করা। আমাদের সকলকে মানবধিকারের চেতনা ধারণ করতে হবে। তবেই আমরা সভ্য জাতিতে পরিণত হব।



