
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের গৌরবময় অধ্যায়ে নেমে এলো শোকের ছায়া। সুদানের আবেই এলাকায় সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় শাহাদাত বরণকারী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ জন বীর শান্তিরক্ষীর মরদেহ আজ ঢাকায় পৌঁছেছে। শান্তির জন্য জীবন উৎসর্গকারী এই বীর সন্তানদের মরদেহ গ্রহণের মধ্য দিয়ে পুরো জাতি আবারও অনুভব করল ত্যাগ আর সম্মানের গভীর অর্থ।
ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার। গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সংঘটিত বর্বরোচিত সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় শহীদ হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ জন শান্তিরক্ষী। আজ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে করে তাঁদের মরদেহ দেশে প্রত্যাবর্তন করে।
বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অফ জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম বিপি এসবিপি ওএসপি বিএএম এনডিসি পিএসসি শহীদ শান্তিরক্ষীদের মরদেহ গ্রহণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশে জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রতিনিধি, ইউনিসফা মিশনের ফোর্স কমান্ডারের প্রতিনিধি, চিফ কমিউনিটি লিয়াজো অফিসার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি ইউএন, ওভারসিজ অপারেশন পরিদপ্তরের পরিচালক, সেনা সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বেসামরিক প্রশাসনের প্রতিনিধিবৃন্দ ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
মরদেহ গ্রহণকালে সকল উপস্থিত কর্মকর্তা ও সদস্য দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। পরে সামরিক রীতিতে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে স্যালুট প্রদান করা হয়। পুরো পরিবেশ জুড়ে ছিল শোক, শ্রদ্ধা ও গভীর আবেগের আবরণ।
আগামীকাল ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে ঢাকা সেনানিবাসস্থ কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে শহীদ শান্তিরক্ষীদের নিজ নিজ বাড়িতে হেলিকপ্টারযোগে পাঠানো হবে। পরে তাঁদের দাফন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায়।
উল্লেখ্য, উক্ত সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় ৬ জন শান্তিরক্ষী শহীদ হওয়ার পাশাপাশি আরও ৯ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ৮ জন কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে অবস্থিত আগা খান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের লেভেল ৩ সুবিধায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে তাঁরা সবাই শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
শান্তি প্রতিষ্ঠার মহান ব্রতে জীবন উৎসর্গকারী এই বীর সন্তানদের আত্মত্যাগ জাতির ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁদের রক্তে লেখা দায়িত্ববোধ ও সাহসের গল্প বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের সম্মানকে আরও উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।



