অপরাধঅব্যাবস্থাপনাজাতীয়দুর্নীতিপ্রশাসন

শত অভিযোগ প্রমাণিত হলেও পদোন্নতি আবু সুফিয়ানের খুঁটির জোর কোথায়?

মুহাম্মদ জুবাইর

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার।শতাধিক অভিযোগ আর আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ থাকার পরও পদোন্নতি পাওয়া ক্যাপ্টেন আমীর মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানকে ঘিরে উঠেছে তীব্র বিতর্ক।স্বজন প্রীতি নাবিকদের হয়রানি নিয়োগে অনিয়ম বেতন বৈষম্য জাল সনদে চাকরি এবং বিধি ভেঙে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগসহ একের পর এক গুরুতর অভিযোগের পরও তাকে জিএম ডিপিএ চলতি দায়িত্ব ও সিইও পদে পদোন্নতি দেওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন বিএসসির কর্মকর্তা কর্মচারীরা।প্রশ্ন উঠেছে এতসব অভিযোগের পরও তার পেছনে শক্তিশালী খুঁটির জোর কোথায়?

শনিবার নগরের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন সী-ম্যান্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ করেন আবু সুফিয়ানের কারণে প্রতিষ্ঠান সীমাহীন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।তারা বলেন ছয়টি নতুন জাহাজে অদক্ষ ক্যাপ্টেন ও চিপ ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যা সরাসরি নিরাপত্তা ও দক্ষতার জন্য হুমকি।এমনকি রাশিয়ান নেভির নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যুদ্ধ সীমানায় জাহাজ পাঠানোর ঘটনায় বিএসসি একটি নতুন জাহাজ ও একজন চৌকস অফিসার হারিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয় জাহাজে নাবিক বা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দিতে প্রথমেই ক্যাপ্টেন আমীর মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। পদ ও দায়িত্ব অনুযায়ী টাকা দাবি করা হয় চাকরি চলাকালীন বেতনের কমিশন পর্যন্ত নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।তার নির্দেশ অমান্য করলে চাকরি হারানো থেকে শুরু করে নানান হয়রানির শিকার হতে হয় নাবিকদের।এই অবৈধ লেনদেনকেই বেতন বৈষম্যের মূল কারণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

অভিযোগের তালিকায় উঠে আসে মোঃ সোহানূর রহমান সোহান নামে এক ট্রেইনিং ফায়ারম্যানের কথাও।তাকে জাহাজে ওঠার সুযোগ দিতে দুই লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার ওপর অমানবিক শারীরিক নির্যাতন চালানো হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

নেতৃবৃন্দ আরও জানান দুদক তদন্তে দোষী প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও জাল সার্টিফিকেটের মাধ্যমে আবু সুফিয়ান এখনও চাকরিতে বহাল আছেন।একের পর এক অভিযোগ জমা পড়লেও বিএসসি কিংবা নৌ মন্ত্রণালয় থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।বরং এসপিডি বিভাগ থেকে তাকে পদোন্নতি দিয়ে আরও ক্ষমতাধর করা হয়েছে।এতে শুধু প্রতিষ্ঠানের সুনাম নয় দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প ও ব্যবসায়িক অঙ্গনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এখন প্রশ্ন একটাই শত অভিযোগ প্রমাণ আর ক্ষতির হিসাব সামনে থাকার পরও আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেই, নাকি অদৃশ্য কোনো শক্ত খুঁটির জোরেই তিনি বারবার পার পেয়ে যাচ্ছেন।

    Related Articles

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    Back to top button