জাতীয়প্রশাসন

সুদানে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় শহীদ ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায়

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় শাহাদাতবরণকারী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ জন বীর শান্তিরক্ষীর নামাজে জানাযা রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার ২১ ডিসেম্বর ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে আয়োজিত এই জানাযা অনুষ্ঠানে জাতির পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করা হয় জাতিসংঘের নীল পতাকার নিচে দেশের সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে জীবন উৎসর্গকারী এই বীর সন্তানদের।

জানাযা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন। এছাড়া সামরিক বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বিভিন্ন পদবির সদস্য এবং গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা অংশ নেন। জানাযার আগে শহীদ শান্তিরক্ষীদের বর্ণাঢ্য কর্মজীবন ও আত্মত্যাগের ইতিহাস পাঠ করা হয় এবং তাঁদের স্বজনরা আবেগঘন বক্তব্য প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে ইউনিসফার চিফ কমিউনিটি লিয়াজোঁ অফিসার বরিস এফ্রেম চৌমাভি বক্তব্য রাখেন। জানাযা শেষে শহীদদের প্রতি যথাযথ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদান করা হয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে সামরিক সচিবগণ এবং তিন বাহিনীর প্রধানগণ পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান। পরে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে শহীদদের নিকট আত্মীয়দের হাতে জাতিসংঘের পতাকা তুলে দেওয়া হয়।

গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় ৬ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী শহীদ হন এবং ৯ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ৮ জন কেনিয়ার নাইরোবিতে আগা খান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং সকলেই বর্তমানে শঙ্কামুক্ত। শহীদদের মরদেহ গতকাল এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে ঢাকায় পৌঁছে। এর আগে আবেইতে সামরিক রীতি অনুযায়ী তাঁদের জানাযা ও সম্মান প্রদর্শন করা হয়।

আজ শহীদদের মরদেহ নিজ নিজ জেলা নাটোর কুড়িগ্রাম গাইবান্ধা রাজবাড়ী ও কিশোরগঞ্জে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে পাঠানো হবে এবং সেখানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন করা হবে। এই অপূরণীয় ক্ষতিতে জাতি শোকাহত হলেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও জাতিসংঘ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে শহীদদের পরিবারের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button