চট্টগ্রামে সহিংসতা ও অবৈধ অস্ত্র নিয়ে উদ্বেগ

মুহাম্মদ জুবাইর
চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ভয় এবং অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।তিনি মনে করেন,প্রকাশ্য দিবালোকে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটলেও অনেক ঘটনায় জড়িত অপরাধীরা এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ায় জনমনে নিরাপত্তাহীনতা আরও বেড়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার ২৩ ডিসেম্বর নগরের দেওয়ানবাজারে চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কর্মপরিষদ বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি আরও দাবি করেন,চলতি বছরের বিভিন্ন সময়ে চট্টগ্রামে সংঘটিত সহিংস ঘটনার বেশিরভাগই এখনো বিচারহীন থেকে গেছে।এতে অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, চলতি বছরের ৫ নভেম্বর বায়েজিদ থানার চালিতাতলী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন সরোয়ার হোসেন বাবলা নামের এক যুবক।ওই ঘটনায় বিএনপির নগর আহ্বায়কসহ অন্তত তিনজন আহত হন।এর আগে ২০২৪ সালের মার্চে বাকলিয়া এক্সেস রোডে মো. আব্দুল্লাহ আল রিফাত ও মো. বখতিয়ার হোসেনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
এভাবেই বছরজুড়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে গুলিবর্ষণ, হত্যাকাণ্ড এবং সহিংসতা ঘটলেও এসব ঘটনার নেপথ্যের শক্তি ও অস্ত্রের উৎস চিহ্নিত না হওয়ায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নজরুল ইসলাম বলেন,চলতি বছরের মে মাসে পতেঙ্গা সৈকতে আলী আকবর নামে একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।পরে অক্টোবরে বাকলিয়া এলাকায় সাজ্জাদ হোসেন নামে আরেকজন গুলিতে নিহত হন।এসব ঘটনার কোনো কোনো ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে গুলিবিনিময়ের কথা শোনা যায়।কিন্তু অনেক অপরাধীই বিশেষ ব্যবস্থাপনায় স্বল্প সময়ের মধ্যেই জামিনে মুক্তি পাচ্ছে এমন অভিযোগও রয়েছে।
তিনি দাবি করেন,আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একটি রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকেই এসব সহিংস ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। নির্বাচনের প্রাক্কালে এ ধরনের সহিংসতা উদ্বেগজনক।তিনি আশা প্রকাশ করেন, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করবে।
তিনি আরও বলেন,গণসংযোগের অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশকে অবহিত করার বিষয়টি সিএমপি কমিশনারের কাছে প্রস্তাব আকারে তুলে ধরা হয়েছে।এতে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা সহজ হবে এবং সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলার ঝুঁকিও কমবে বলে তিনি মনে করেন।
কর্মপরিষদ বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, মোহাম্মদ মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, ডা. ফজলুল হক, ডা. সিদ্দিকুর রহমান এবং এসএম লুৎফুর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
সভায় বক্তারা সবাই আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে দেশে একটি স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানান। তারা মনে করেন,আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর মনোভাব, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।



