যাত্রাবাড়ীতে গৃহবধূর আত্মহত্যা: স্বামীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে প্ররোচনার অভিযোগ

পরকীয়া সম্পর্কের জেরে নির্যাতন ও মানসিক চাপ, দাবি নিহতের পরিবারের
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের ক্রমাগত নির্যাতন এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার শিকার হয়ে শিমলা আক্তার (২২) নামের এক গৃহবধূর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই পাঁচজনের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনার বিস্তারিত
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা ৩০ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময়ে যাত্রাবাড়ীর একটি ভাড়া বাসায় নিজ কক্ষের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন শিমলা আক্তার। বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে নিহতের শ্বশুর সালাউদ্দিন বাবু পরিবারের সদস্যদের ফোনে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিমলার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নির্যাতন ও প্ররোচনার অভিযোগ
নিহত শিমলা আক্তারের ভাই মো. জাকির হোসাইন যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, প্রায় পাঁচ বছর আগে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক তাঁর বোন শিমলার বিয়ে হয় মো. সুমন আহম্মদ রিমন (২৫)-এর সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী সুমন, শ্বশুর সালাউদ্দিন বাবু, দেবর ইমন আহম্মেদ শুভ এবং শাশুড়ি শিউলি বেগম বিভিন্ন সময় শিমলাকে মানসিকভাবে চাপ সৃষ্টি ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন।
পরকীয়া সম্পর্কের জেরে প্ররোচনা
অভিযোগে আরও বলা হয়, স্বামী সুমনের সঙ্গে প্রতিবেশী সুইটি (১৯) নামের এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং প্রায় পাঁচ মাস আগে তারা গোপনে বিয়েও করে। এই পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়টি শিমলা জানতে পারার পর অভিযুক্তরা তাঁর ওপর নির্যাতন আরও বাড়িয়ে দেয়। তারা শিমলাকে প্রায়ই অপমান, মারধর করত এবং ক্রমাগত আত্মহত্যার প্ররোচনা দিত। এমনকি তারা শিমলাকে সরাসরি বলত, “তুই মরলে সুমন সুইটির সঙ্গে সংসার করতে পারবে।” এই মানসিক চাপের কারণেই শিমলা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে পরিবারের অভিযোগ।
পুলিশের বক্তব্য
এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. জাকির হোসাইন স্বামী সুমন আহম্মদ রিমন, শ্বশুর সালাউদ্দিন বাবু, দেবর ইমন আহম্মেদ শুভ, শাশুড়ি শিউলি বেগম এবং প্রতিবেশী সুইটি-সহ মোট পাঁচজনকে আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



