ইসমে আজম: যে দোয়া পাঠে আল্লাহ সাড়া দেন বলে বিশ্বাস করা হয়

মুসলিমদের জীবনে দোয়া বা প্রার্থনা একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। বিশ্বাস করা হয়, বিপদে-আপদে, সুখে-দুঃখে—সর্বাবস্থায় আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনার মাধ্যমে প্রশান্তি লাভ করা যায়। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এমন কিছু বিশেষ দোয়া ও পদ্ধতির কথা উল্লেখ রয়েছে, যা পাঠ করলে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এর মধ্যে ইসমে আজম অন্যতম।
ইসমে আজম কী এবং এর গুরুত্ব
“ইসমে আজম” শব্দের অর্থ “মহান নাম”। ইসলামী পরিভাষায়, এটি আল্লাহ তাআলার সেইসব গুণবাচক নামকে বোঝায়, যা উল্লেখ করে দোয়া করলে আল্লাহ সেই দোয়া ফিরিয়ে দেন না বলে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। যদিও নির্দিষ্ট কোনো একটি নামকে ইসমে আজম হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়নি, তবে বিভিন্ন হাদিসের আলোকে কিছু দোয়াকে আলেমরা ইসমে আজম হিসেবে গণ্য করেছেন। নিচে তেমনই একটি দোয়া উল্লেখ করা হলো:
ইসমে আজম দোয়াটি:
“আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্না লাকাল হামদু, লা-ইলাহা ইল্লা আন্তাল মান্নান, বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ, ইয়া যালজালালি ওয়াল ইকরাম, ইয়া হাইয়ু ইয়া কাইয়্যুম।”
অর্থ: “হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি, কারণ সকল প্রশংসা আপনারই। আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আপনি দয়াবান, আসমান ও জমিনের স্রষ্টা। হে মহিমাময় ও মহানুভব, হে চিরঞ্জীব, হে চিরস্থায়ী।”
বিশ্বাস করা হয়, এই দোয়া পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর প্রশংসা এবং তাঁর মহত্ত্বকে স্বীকার করে কিছু চাওয়া হলে, আল্লাহ সেই প্রার্থনা কবুল করেন।
বিপদ মুক্তির আরেকটি শক্তিশালী দোয়া: দোয়া ইউনুস
কঠিন বিপদ ও সংকট থেকে মুক্তি লাভের জন্য পবিত্র কোরআনে বর্ণিত একটি বিখ্যাত দোয়া হলো “দোয়া ইউনুস”। নবী ইউনুস (আ.) মাছের পেটে বন্দি থাকা অবস্থায় এই দোয়া পাঠ করে মুক্তি লাভ করেছিলেন। দোয়াটি হলো:
“লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুব্হানাকা ইন্নি কুনতু মিনায যালিমিন।”
অর্থ: “আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, আপনি পবিত্র। নিশ্চয়ই আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম।”
এই দোয়ার মাধ্যমে নিজের অসহায়ত্ব ও ভুল স্বীকার করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও সাহায্য প্রার্থনা করা হয়, যা বিপদ থেকে উত্তরণের অন্যতম সেরা উপায় হিসেবে বিবেচিত।
দোয়া কবুলের বিশ্বাস ও তাৎপর্য
যেকোনো দোয়া কবুল হওয়ার জন্য পূর্ণ বিশ্বাস, আন্তরিকতা ও একাগ্রতা অপরিহার্য। ইসমে আজম বা দোয়া ইউনুসের মতো শক্তিশালী দোয়াগুলো পাঠের মাধ্যমে একজন মুমিন আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার সুযোগ লাভ করে। চূড়ান্তভাবে, সকল দোয়া কবুলের মালিক একমাত্র আল্লাহ তাআলা, এবং তাঁর কাছেই সর্বোত্তম সাহায্য চাইতে হয়।



