অন্যান্যবাংলাদেশ

মেরিনার্স ফুড এন্ড এগ্রো লিমিটেডের শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

অপরাধ বিচিত্রা ডেক্স : পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলাধীন সিন্দুরিয়া এলকায় মেরিনার্স ফুড এন্ড এগ্রো লিমিটেডের শ্রমিকদের কোন প্রকার পূর্ব নোটিশ প্রদান করে করেই এমডি শামীম আহমেদ কর্তৃক আমিনপুর থানার ওসির সহযোগিতায় সকল মেশিন ও যাবতীয় মালামাল লুটের প্রতিবাদে ১৭ আগস্ট ২০২৫ রোববার বিক্ষোভ মিছিল করেছেন কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীরা।

এ সময় শ্রমিক-কর্মচারীরা শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের সকল পাওনাদি ও বকেয়া বেতন পরিশোধের জোর দাবি জানান। একই সাথে শ্রমিকদের নামে এমডি শামীমের সরকার মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত শ্রমিক হারুনের নিঃশর্ত মুক্তিসহ সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

বিক্ষোভ মিছিলে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক মিলন শেখ, রাহেলা খাতুন, মোছাম্মৎ সালেহা খাতুন, আকলিমা খাতুন, আম্বিয়া খাতুন, রনি শেখ, শাকিল শেখ প্রমুখ।

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রাষ্ট্র সংস্কার শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্র কমিটির সদস্য শ্রমিক নেতা শেখ নাসির উদ্দিন বলেন, অবিলম্বে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনাদি বুঝিয়ে দিন। আমিনপুর থানার ওসি শ্রমিকদের তিন দিনের ভিতরে তাদের বেতন ভাতা সম্পূর্ণ বুঝিয়ে দেওয়া আশ্বাস দিলেও এখন পুরোপুরি অস্বীকার করছে। তিনি বলছেন, ‘আমি ওখানে যাইনি, আমার স্টেশনের পুলিশ পাঠায়নি’, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

তিনি আরো বলেন, যেকোন কোম্পানী স্থানান্তর বা বন্ধ করতে হলে শ্রমিকদের ৩ মাস আগে নোটিশ দিয়ে অবগত করতে হয় এবং তাদের বকেয়া বেতন-ভাতাদি পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু শামীম আহমেদ গং কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই গায়ের জোরে মালামাল নিয়ে গিয়েছেন। আর এ কাজে সহযোগিতা করেছেন প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কিছু কর্মকর্তা। আমরা শামীম আহমেদ ও আমিনপুর থানার ওসির বিচার দাবি করছি, শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পরিশোধে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। অন্যথায় যেকোন অপ্রীতিকার পরিস্থিতির দায় সরকার ও শামীম আহমেদের ওপর বর্তাবে।

উল্লেখ্য যে, স্থানীয় থানার ওসি’র প্রত্যক্ষ সহায়তায় মেরিনার্স ফুড এন্ড এগ্রো লিমিটেডের মালামাল লুটের অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির ৫ ডিরেক্টরের একজন মোঃ শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে। এসময় শ্রমিক-কর্মচারীরা তাদের পাওনা বেতন-ভাতার দাবি জানাতে তাদের মারধর ও মিথ্যা মামলায় হয়রানি ভয়-ভীতি দেখানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা।

জানা যায়, কোম্পানির সিডিউল টেন অনুযায়ী এই কোম্পানির মালিক পাঁচজন- ১. মোঃ শামীম আহমেদ, ২. মোঃ মাসুদ রানা, ৩. মোঃ ফজলুল করিম, ৪. মোঃ আব্দুল আওয়াল ও ৫. মোঃ ফাহাদুল আফসার চৌধুরী। জনাব শামীম আহমেদ কোম্পানির  বাকী ডিরেক্টরদের নিয়ে কখনো কোন মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেন না। কোম্পানি তিনি একক স্বৈরাচার নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত করছেন।ডিরেক্টরদের সাথে তিনি কখনোই কোম্পানির জবাবদিহিতা করেন না। কোম্পানির বাকি ডাইরেক্টরদের স্বাক্ষর নকল ও অবৈধভাবে জানা অজানা শতাধিক মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এর উদ্দেশ্যে হাতিয়ে নিয়েছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে  সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ও আর জেএসসিতে একটি কমপ্লেইন দাখিল ও প্রত্যেকটা ব্যাংককে একাউন্ট ফ্রিজ করার জন্য নোটিশ প্রদান করেন বাকি ডিরেক্টররা। অতঃপর তারা পল্লী বিদ্যুৎ কাশিনাথপুর শাখা, বিএসটিআই, পাবনা আমরা অভিযোগ দাখিল করেন। অন্যান্য মালিকেরা যখন কোম্পানিটা বন্ধ করেছি ঠিক তখনি শামীম আহমেদ অন্য অনেকগুলো কোম্পানি খুলেছেন যার মধ্যে মেরিনার্স বেকার্স এন্ড বেভারেজ লিমিটেড একটি। শামীম আহমেদ মেরিনারস ফুড এন্ড এগ্রো লিমিটেডের সম্পদ মেরিনার্স বেকারস এন্ড বেভারেজ লিমিটেডের নামে সম্পদ ট্রান্সফার করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন, অন্যরা তাৎক্ষণাৎ বাধা প্রদান করেন। শামীম আহমেদ আওয়ামী  ফ্যাসিস্ট এর দোসর। শামীম গং ও  আমিনপুর থানার ওসির নগ্ন হস্তক্ষেপে প্রশাসনের সহযোগিতায় ১০ আগস্ট ২০২৫ রবিবার দিনে-দুপুরে কোম্পানির শ্রমিকদের মারধর, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অস্ত্রের মুখে শ্রমিকদের অধিকার বঞ্চিত করে এবং মেরিনার্স ফুড এন্ড এগ্রো লিমিটেডের মালিকদের সম্পদ ও মেশিনারিজ ক্রেন ও ট্রাক ব্যবহার করে প্রায় দুই কোটি টাকার মালামাল ডাকাতি ও লুট করে। এই ঘটনাটির পুরাটাই আমিনপুর থানার ঐ ওসির নগ্ন হস্তক্ষেপে সংঘটিত হয়েছে। ভুক্তভোগীরা ঘটনার সঠিক তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিচার দাবি করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button