Uncategorized

জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনে ফুটপাত দখল করে রমরমা বাণিজ্য

ডেস্ক রিপোর্ট:

দেশের স্বাধীনতার সূর্যসন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পবিত্র স্থান জাতীয় স্মৃতিসৌধ। কিন্তু এই শ্রদ্ধার প্রতীকের সামনের পরিবেশই এখন প্রশ্নবিদ্ধ। স্মৃতিসৌধের সামনের প্রধান সড়কের দুই পাশের ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে কয়েকশ অবৈধ দোকান, যা এটিকে একটি বাণিজ্যিক এলাকায় পরিণত করেছে। এর ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের পোহাতে হচ্ছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। অভিযোগ উঠেছে, প্রশাসনের নাকের ডগাতেই চলছে নীরব চাঁদাবাজি।

ফুটপাত যেন বাণিজ্যিক এলাকা

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাভারের নবীনগর বাসস্ট্যান্ড থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ২ নম্বর গেট পর্যন্ত সড়কের দুই পাশের পুরো ফুটপাতই হকারদের দখলে। সারি সারি করে বসানো হয়েছে কয়েকশ দোকান। খেলনা, খাবার, কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। ফুটপাতের এক ইঞ্চি জায়গাও খালি নেই, যা দেখে বোঝার উপায় নেই এটি সাধারণ মানুষের হাঁটার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। পরিস্থিতি এমন যে, মনে হতে পারে কর্তৃপক্ষই হয়তো ফুটপাতটি ব্যবসায়ীদের কাছে ইজারা দিয়েছে।

দর্শনার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ

প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পরিবার ও শিশুদের নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু প্রধান ফটকের সামনেই তাদের পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়। ফুটপাত দখল করে দোকান বসানোর কারণে দর্শনার্থীদের বাধ্য হয়ে মূল সড়কের ওপর দিয়ে হাঁটতে হয়, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে নারী, শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। ধাক্কাধাক্কি আর হকারদের হাঁকডাকে স্মৃতিসৌধের শান্ত ও পবিত্র পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অনেক দর্শনার্থী।

প্রশাসনের নাকের ডগায় নীরব চাঁদাবাজি

স্থানীয় একাধিক গোপন সূত্র জানিয়েছে, এই কয়েকশ দোকান থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা চাঁদা তোলা হয়। একটি প্রভাবশালী চক্র এই চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, জাতীয় স্মৃতিসৌধের সীমানার ভেতরেই একটি পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। কিন্তু ফুটপাত দখল বা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে তাদের কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পুলিশ সবকিছু জেনেও ‘চোখ থাকতে অন্ধ’ সেজে আছে।

কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা

সাধারণ দর্শনার্থী ও এলাকাবাসীর দাবি, জাতীয় স্মৃতিসৌধের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র স্থানের পরিবেশ রক্ষা করা জরুরি। তারা চান, প্রশাসন যেন দ্রুত এই অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে এবং চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে। দর্শনার্থীরা যেন কোনো রকম হয়রানি ছাড়াই স্বস্তিতে চলাচল করতে পারেন, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button