শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে গণমাধ্যমের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি সরকারের
সন্ত্রাসবিরোধী আইন ও আদালতের নির্দেশ অমান্য করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বিবৃতিতে জানানো হয়।
ঢাকা, নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের সব টেলিভিশন, সংবাদপত্র এবং অনলাইন সংবাদমাধ্যমকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো অডিও, ভাষণ বা বক্তৃতা সম্প্রচার বা প্রচারের বিষয়ে কঠোরভাবে সতর্ক করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। শুক্রবার এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে সরকার জানিয়েছে, দণ্ডিত ও পলাতক আসামি হিসেবে শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রচার করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের লঙ্ঘন এবং এর পুনরাবৃত্তি ঘটলে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেন এই হুঁশিয়ারি?
সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ্য করা গেছে যে কিছু গণমাধ্যম আইন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বৃহস্পতিবার শেখ হাসিনার একটি “মিথ্যা ও উস্কানিমূলক” ভাষণ প্রচার করেছে। এই ঘটনার পরই সরকারের পক্ষ থেকে এই কঠোর সতর্কবার্তা এলো।
বিবৃতিতে বলা হয়, “আমাদের জাতির ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমরা অপ্রয়োজনীয় বিভ্রান্তি তৈরির ঝুঁকি নিতে পারি না।”
আইনি ভিত্তি ও অভিযোগ
সরকার তার অবস্থানের পেছনে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট আইনি ভিত্তির কথা উল্লেখ করেছে:
- সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯: সরকার মনে করিয়ে দেয় যে, শেখ হাসিনা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত একজন পলাতক আসামি। এ ছাড়া তার দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুসারে, নিষিদ্ধ সংগঠনের কোনো নেতার বক্তব্য বা কার্যকলাপ প্রচার করা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ।
- আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিষেধাজ্ঞা: গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (ICT) শেখ হাসিনার ঘৃণামূলক বক্তব্য (Hate Speech) সম্প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় শত শত বিক্ষোভকারীকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পরই শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারাধীন।
গণমাধ্যমের প্রতি সরকারের আহ্বান ও চূড়ান্ত সতর্কতা
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশকে গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “শেখ হাসিনার বক্তব্য দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি ও সহিংসতাকে উসকে দেওয়ার উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়, যা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।”
সরকার সকল সংবাদমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়ে চূড়ান্তভাবে সতর্ক করে বলেছে, এই বিধিনিষেধ অমান্যকারী যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনের অধীনে কঠোর জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে।



