
এম. এ. মান্নান
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল ও নালা অবৈধ দখলমুক্ত করা জরুরি। এ ছাড়া নগরবাসীর স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে এবং পরিবেশ সুন্দর রাখতে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
তিনি জানান, সম্প্রতি আব্দুল লতিফ সড়ক সংস্কারের জন্য ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে নগরীর অলিগলিসহ সব রাস্তা সংস্কার করা হবে। শিগগিরই প্রায় ২৩টি বড় সড়কের নির্মাণ ও সংস্কারকাজ শুরু হবে, যা চট্টগ্রামের অবকাঠামো উন্নয়নে আমূল পরিবর্তন আনবে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে নগরীর চকবাজার ডিসি রোডস্থ ভরাপুকুর পাড় এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক আয়োজিত ১৭ নং পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডের অসহায় ও দুস্থদের মাঝে চাল ও স্মার্ট কার্ড বিতরণ এবং বিএনপির সদস্য ফরম পূরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডের দুই শত পরিবারের মাঝে চাল বিতরণ করেন।
মেয়র বলেন, “আমি যখন শপথ গ্রহণ করি, তখন অনেকেই প্রশ্ন করেছিলেন জলাবদ্ধতা নিরসন কীভাবে করা হবে। আমার প্রথম চিন্তা ছিল, নালার উপর নির্মিত বড় বড় মার্কেটগুলো ভেঙে দেওয়া। সেই প্রেক্ষিতে বহদ্দারহাটের একটি বড় মার্কেট ভেঙে সেনাবাহিনীর সহায়তায় সেখানে বড় নালা তৈরি করে বারইপাড়া খালের সঙ্গে একটি বিকল্প চ্যানেলের মাধ্যমে কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে যুক্ত করেছি। এর ফলে এলাকায় ভালো ফল পাওয়া গেছে।”
তিনি আরও বলেন, হিজরাখাল ও বিকল্পখালসহ বিভিন্ন নালার সংস্কারকাজ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডসহ বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত সহযোগিতায় সম্পন্ন করা হচ্ছে। এর ফলে বাকলিয়া এলাকায় জলাবদ্ধতার দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে। নালার সংস্কারকাজ অব্যাহত থাকবে, কারণ নালাই আমাদের প্রাথমিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা। তবে নগরবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে, যেন প্লাস্টিক, পলিথিন বা ককশিট নালায় ফেলা না হয়, কারণ এগুলোই জলাবদ্ধতার মূল কারণ।
ডা. শাহাদাত বলেন, “ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্লাস্টিক বোতল ও পলিথিনে জমে থাকা পানিই ডেঙ্গু মশার জন্ম দেয়। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। নাগরিক হিসেবে আপনারা কেবল সুবিধাভোগী নন, বরং নগরকে ভালোবাসা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও আপনাদের।”
চন্দনপুরা ব্রিজের কাজের ধীরগতি প্রসঙ্গে তিনি জানান, ইতোমধ্যেই সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য বলা হয়েছে। একইভাবে বাকলিয়া ও কালামিয়া বাজার এলাকার দীর্ঘমেয়াদি কাজগুলোও দ্রুত শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মেয়র তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “শপথ নেওয়ার সময় আমি বলেছিলাম, চট্টগ্রাম শহরের ৪১ ওয়ার্ডে ৪১টি খেলার মাঠ তৈরি করব। সেই লক্ষ্যে আমি কাজ শুরু করেছি। তরুণ প্রজন্মের জন্য সুস্থ বিনোদন ও খেলাধুলার পরিবেশ নিশ্চিত করাই আমার লক্ষ্য।”
পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক হাজী মো. এমরান উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মহিউদ্দিন মিজানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, মোহাম্মদ মহসিন, সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক অধ্যক্ষ খোরশেদ আলম, সাবেক সদস্য ফরিদুল হক লিটন, পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ আলাউদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম, আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল কাদের, যুগ্ম আহ্বায়ক রাজা মিয়া, সাবেক কাউন্সিলর আরিফুল ইসলাম ডিউক, চকবাজার থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আখম জাহাঙ্গীর আলম, বিএনপি নেতা মো. ইদ্রিস, হাজী নুর মোহাম্মদ, মো. আরিফ, মো. শাহজাহান প্রমুখ।



