মামলা করিয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ আশুলিয়ায় দুই প্রতারকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

মাহবুব আলম মানিক ,সাভার আশুলিয়া : রাজধানীর শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় মামলা করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে দুই প্রতারকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আশুলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিজেদের থানার লোক ও আইনজীবী পরিচয় দিয়ে ওই দুই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে আশুলিয়া থানায় সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে আসছিল। নিত্যদিনের মত গত ২৬/০৮ ২৫ ইং তারিখে মাসুদা আক্তার নামে এক নারীকে তারা মামলা ও আইনি সহায়তা করে দেওয়ার কথা বলে তার কাছে ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন। তাৎক্ষনিক এত টাকা যোগার করতে না পারায় সাথে যা আছে তা দিতে বলেন এবং বাকি টাকা পরদিন পরিষোধ করতে বলেন।
পরে ভুক্তভোগী মাসুদা তার কাছে থাকা ১৮ শ টাকা তুলে দেন ওই দুই প্রতারকের হাতে। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর ভুক্তভোগী মাসুদাকে টাইপকৃত অভিযোগ পত্র থানায় জমা দিতে বাধা দেন তারা। এবং বাকি টাকা না দেওয়া পযন্ত থানায় যাওয়া যাবে না মর্মে জানান প্রতারকরা। তাদের কথায় ও আচরণে সন্দেহ হলে মাসুদা তাদের ব্যাপারে আশে পাশে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে তারা কোনো থানার লোক নয়, তারা একটা প্রতারক চক্র। এটা জানার পর একপর্যায়ে মাসুদা টাকা ফেরত চাইতে গেলে টাকা দিতে তারা অস্বীকৃতি ও টালবাহানা শুরু করেন এবংকি উল্টো মামলার হুমকি দেন।
অভিযোগকারী মাসুদা আরও জানান ,
“ন্যায়বিচারের আশায় তাদের কথায় বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু পরে বুঝতে পারি তারা প্রতারক। টাকা ফেরত চাইলে উল্টো ভয়ভীতি দেখায়। তাই বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ করেছি।”অভিযুক্তরা হলেন কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারি সদর থানার মোঃ নুর হোসেনের ছেলে মোঃ আমিরুল ইসলাম ও ময়মনসিংহ জেলার মিস্টার। তারা উভয়ই বর্তমান আশুলিয়া থানাধীন বাইপাইল থানা রোড বাচ্চু মন্ডলের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
তথ্য সুত্রে জানা যায়, প্রতারক মিস্টার বিগত সৈচার আমলে গণহত্যাকারী ঢাকা ১৯ আসন এর সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামের সন্ত্রাসী বাহিনীর একনিষ্ঠ লোক ছিলেন। সেই প্রভাবেই বিগত দিন থেকে এমন অপকর্ম করে আসছেন। ৫ ই আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর সাবেক এমপি সাইফুল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী পালিয়ে গাঁ ঢাকা দিলেও কোন এক অদৃশ্য শক্তিতে এখনো আশুলিয়া থানার সামনে প্রতারণার দোকান খুলে বসে আছেন মিস্টার। লোকমুখে জানা যায় কোন এক আওয়ামী পন্থী আইনজীবীর ছত্রছায়ায় প্রকাশ্য দিবালোকে এমন প্রতারণা করছেন মিস্টার ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা। তাদের প্রতারণার বিষয়ে কেহ কথা বললেই আওয়ামী লীগ পন্থী ওই আইনজীবীকে দিয়ে আদালতে মিথ্যা মামলা ঠুকে দেন তাদের বিরুদ্ধে। যার কারণে প্রতিবাদ তো দুরের কথা, কথা বলার সাহস পায়না কেউ। মিস্টার সহ তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ এর আরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে যার অডিও ভিডিও তথ্য প্রমাণ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পর্বে প্রকাশ করা হবে।
গত ২৬ সে আগষ্ট তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা এবং সংবাদ সংগ্রহ করতে আশুলিয়া থানার সামনে মিস্টার কম্পিউটারস নামক দোকানে সাংবাদিকরা প্রবেশ করে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতারক মিস্টার ও আমিরুল সাংবাদিকদের মিথ্যা চাদাবাজীর মামলা দিয়ে দেখে নেওয়া হুমকি দেন।
এবিষয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, “লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ওই দুই ব্যক্তিকে থানায় ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। এবং ভুক্তভোগীর থেকে প্রতারণার মাধ্যমে নেওয়া ১৫ শ টাকা উদ্ধার করে তাকে ফেরৎ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে এরকম কোন অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। সাধারণ মানুষকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে তারা প্রতারণা করে যাচ্ছে। দ্রুতই তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।



