সীতাকুণ্ডের গহীন পাহাড়ে অস্ত্রের কারখানা, সেনাবাহিনীর অভিযানে বিপুল সরঞ্জামসহ আটক ৪

জঙ্গল সলিমপুরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযান; আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ, রামদা ও ওয়াকিটকিসহ ৪ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার।
মুহাম্মদ জুবাইর: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরের গহীন পাহাড়ে একটি দেশীয় অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে। শনিবার ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশের এক যৌথ অভিযানে এই কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় অস্ত্র তৈরির সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভোর রাতের যৌথ অভিযান
সীতাকুণ্ড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মজিবুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জঙ্গল সলিমপুরের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অস্ত্র তৈরির কারখানার তথ্য পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর ভিত্তিতে শনিবার ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও সীতাকুণ্ড মডেল থানার পুলিশ সদস্যরা এলাকাটি ঘিরে ফেলে এবং যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে কারখানার সন্ধান পাওয়ার পর সেখান থেকে অস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধারসহ চারজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
যা যা উদ্ধার করা হয়েছে
অভিযানস্থল থেকে একটি মিনি অস্ত্র কারখানার মতো সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের তালিকায় রয়েছে:
- দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র: ৬টি
- খালি কার্তুজ: ৩৫ রাউন্ড
- তাজা কার্তুজ: ৫ রাউন্ড
- রামদা: ২০টি
- চাইনিজ কুড়াল: ১টি
- ওয়াকিটকি: ২টি (চার্জারসহ)
- মেগাফোন: ১টি
- প্যারাসুট ফ্লেয়ার: ৪টি
- এছাড়াও অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম।
গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয়
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে এই দুর্গম পাহাড়ি এলাকাকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করে অস্ত্র তৈরি ও সরবরাহ করে আসছিল। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো:
১. কামরুল হাসান রেদোয়ান (৩৫): পিতা- ফয়েজ আহমেদ, গ্রাম- ছনুয়া, থানা- বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।
২. মো. রুমন (২৫): পিতা- মো. নুরুল ইসলাম, গ্রাম- ফকিরজুম পাড়া, থানা- মহেশখালী, কক্সবাজার।
৩. মো. আশিক (৩৫): পিতা- মো. মোর্শেদ, গ্রাম- জঙ্গল সলিমপুর, সীতাকুণ্ড।
৪. আমির ইসলাম (৪০): পিতা- জয়নাল আবেদীন, গ্রাম- দক্ষিণ হাতিয়া, থানা- হাতিয়া, নোয়াখালী।
ওসি মো. মজিবুর রহমান আরও জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং তাদের সঙ্গে আর কারা জড়িত, তা খুঁজে বের করতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।



