কক্সবাজারদুর্ঘটনা

কক্সবাজারে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা: ১৫ ঘণ্টা পর মিলল ক্রিকেটার মুশফিকের ভাতিজার মরদেহ

বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করতে নেমে স্রোতের টানে ভেসে গিয়েছিল ১৬ বছর বয়সী আহনাফ। দুই বন্ধুকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ ছিল সে। আজ সকালে সৈকতের সমিতিপাড়া পয়েন্ট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর পর্যটক আহনাফের (১৬) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সৈকতের সমিতিপাড়া পয়েন্ট থেকে তার ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে লাইফগার্ড কর্মীরা। নিহত আহনাফ জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকা খেলোয়াড় মুশফিকুর রহিমের আত্মীয় (সম্পর্কীয় ভাতিজা) এবং বগুড়া শহরের বাসিন্দা শরিফুল ইসলামের পুত্র।

যেভাবে ঘটেছিল দুর্ঘটনা

রবিবার দুপুর পৌনে ৩টার দিকে কক্সবাজারের লাবণী পয়েন্টে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে বেড়াতে আসা আহনাফ তার দুই বন্ধুকে নিয়ে সাগরে গোসল করতে নামে। হঠাৎ সমুদ্রের প্রবল স্রোতের টানে তিনজনই ভেসে যেতে থাকে। বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে সি-সেইফ লাইফগার্ডের সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে নামেন। তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে আহনাফের দুই বন্ধুকে জীবিত অবস্থায় সাগর থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। তবে তীব্র স্রোতের কারণে আহনাফ মুহূর্তেই গভীর সমুদ্রে হারিয়ে যায়।

আহনাফ নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে জেলা প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং লাইফগার্ড কর্মীরা যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশি চালিয়েও তার কোনো সন্ধান মেলেনি।

অবশেষে সোমবার সকাল সোয়া ৬টার দিকে সৈকতের সমিতিপাড়া পয়েন্টে একটি মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয় জেলেরা লাইফগার্ডকে খবর দেয়। পরে লাইফগার্ড ও বিচ কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহটি উদ্ধার করে এবং পরিবারের সদস্যরা সেটিকে আহনাফের বলে শনাক্ত করেন।

সি-সেইফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার ওসমান গণি জানান, “স্থানীয় পোনা শিকারিরা প্রথমে মরদেহটি দেখতে পেয়ে কূলের কাছে নিয়ে আসে। খবর পেয়ে আমরা গিয়ে সেটি উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি।”

এই মর্মান্তিক ঘটনা প্রসঙ্গে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহেদুল ইসলাম বলেন, “বগুড়া থেকে পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে এসে আহনাফ দুর্ঘটনার শিকার হয়। তার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে রাখা হয়েছে। স্বজনরা আমাদের সঙ্গে আছেন। প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।”

এই ঘটনায় কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে আবারও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে এসে এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে নিহতের পরিবার ও পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button