কুমিল্লায় গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের প্রতিবাদে মানববন্ধনে পুলিশের বাধা, ৬ জনকে তুলে নিয়ে নাজেহাল

বিশেষ প্রতিবেদক : কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে গায়েবি মিথ্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিক সহ সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ এনে মানববন্ধন করতে গিয়ে চরম ভীতিকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন কুমিল্লা সচেতন নাগরিক সমাজের লোকজন, মানববন্ধনে বাঁধা সহ সচেতন লোকজনকে নাজেহাল করার অভিযোগ উঠেছে।
আজ ১৩ সেপ্টম্বর রোজ শনিবার সকাল ১০টায় কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে পূর্বঘোষিত মানববন্ধনে অংশ নিতে গিয়ে এক নাটকীয় ও দুঃখজনক ঘটনার সম্মুখীন হন সচেতন নাগরিকরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হওয়া মাত্রই নিজেদের “বৈষম্য বিরোধী” সংগঠনের সদস্য পরিচয় দিয়ে একদল ব্যক্তি মানববন্ধনে বাধা দেয়। তারা মানববন্ধনকারীদের উদ্দেশ্যে হুমকি দিয়ে বলে, “শাহিন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা নিউজ করছে, তোমরা মানববন্ধন করতে পারবে না।” এরপর তারা জোরপূর্বক অন্তত ছয়জনকে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে জানা যায়, তুলে নেওয়া ব্যক্তিদের কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসির কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পুলিশ সদস্যরা তাদেরকে মানসিক চাপে ফেলে নাজেহাল করছে। সাংবাদিক শাহিনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মানববন্ধনে অংশ নিতে যাওয়া কুমিল্লা সচেতন নাগরিক সমাজের সদস্যরা বলেন, “একটি গণতান্ত্রিক দেশে নাগরিক হিসেবে আমাদের অধিকার রয়েছে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা, পুলিশি হয়রানি এবং প্রশাসনিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলে প্রতিবাদ জানানোর। অথচ আজ সেই অধিকার হরণ করা হয়েছে। আমাদের সদস্যদের জোরপূর্বক তুলে নেওয়া হয়েছে, যা সরাসরি নাগরিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের পরিপন্থী।”
তারা আরও অভিযোগ করেন, কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসি মহিনুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ নাগরিকদের নামে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছেন। এসব ঘটনায় কেউ মুখ খুললেই তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা চাপ তৈরি করা হচ্ছে। এবং মানববন্ধনের ব্যানার থানায় জোর করে রেখে দেওয়ার হয়েছে বলে জানা যায়।
এদিকে সাংবাদিক শাহিনকে জড়িয়ে সাক্ষ্য দিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে শাহিন অভিযোগ করে বলেন, “আমি কেবল সত্য ঘটনা তুলে ধরেছি। একজন নাগরিক বা সাংবাদিক হিসেবে সেটা আমার দায়িত্ব। কিন্তু এখন যেভাবে আমার নাম ব্যবহার করে নিরীহ মানুষকে চাপ দেওয়া হচ্ছে, তাতে আমি উদ্বিগ্ন।”
এ বিষয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসির বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
মানবাধিকার সংগঠন ও স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা অবিলম্বে আটককৃতদের মুক্তি, হয়রানিমূলক আচরণের নিরপেক্ষ তদন্ত এবং পুলিশ প্রশাসনের জবাবদিহিতার দাবি জানিয়েছেন।
এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ করাও কি এখন অপরাধ? যদি একজন সচেতন নাগরিকও তার মত প্রকাশ করতে না পারেন, তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?



