মিথ্যা কসমে সম্পদ আত্মসাৎ: আল্লাহর ক্রোধ ও কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারি
অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে দখল করতে মিথ্যা শপথের আশ্রয় নেওয়া হলে পরকালে ভয়াবহ পরিণতির কথা বলা হয়েছে হাদিসে। এর সমর্থনে পবিত্র কুরআনের আয়াতও উল্লেখ করা হয়েছে।
ডেস্ক রিপোর্ট: অন্যের সম্পদ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে মিথ্যা কসম খাওয়ার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। এই ধরনের গর্হিত কাজ আল্লাহর ক্রোধের কারণ হবে এবং পরকালে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটি সহিহ হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেন, ”যে ব্যক্তি কোনো মুসলিম ব্যক্তির সম্পদ অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করার জন্য মিথ্যা কসম খাবে, সে আল্লাহর সঙ্গে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করবে, যখন তিনি তার ওপর ক্রোধান্বিত থাকবেন।”
কুরআনের আলোকে মিথ্যা শপথের পরিণতি
হাদিসটি বর্ণনা করার পর, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সত্যতা প্রমাণের জন্য পবিত্র কুরআন থেকে একটি আয়াত তেলাওয়াত করে শোনান। সূরা আলে ইমরানের ৭৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি ও নিজেদের শপথ স্বল্প মূল্যে বিক্রয় করে, পরকালে তাদের কোনো অংশ নেই। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের দিকে (দয়ার দৃষ্টিতে) তাকাবেন না এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধও করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।’
এই আয়াতের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, যারা পার্থিব সামান্য স্বার্থের জন্য আল্লাহর নামে করা প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথ ভঙ্গ করে, তাদের জন্য পরকালে কোনো পুরস্কার থাকবে না। শুধু তাই নয়, আল্লাহ তাদের প্রতি এতটাই অসন্তুষ্ট হবেন যে, তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলা বা তাদের দিকে দয়ার দৃষ্টিতে তাকানো থেকে বিরত থাকবেন।
গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত
ইসলামে মিথ্যা শপথকে কবিরা গুনাহ বা অন্যতম বড় পাপ হিসেবে গণ্য করা হয়। অন্য হাদিসে মিথ্যা কসমকে শিরক, পিতামাতার অবাধ্যতা এবং অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যার মতো মারাত্মক অপরাধের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অন্যের অধিকার হরণ করা হয়, যা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থ ‘রিয়াদুস সালেহীন’-এ এই হাদিসটি সংকলিত হয়েছে, যার নম্বর ১৭১২। হাদিসটির মান সহিহ এবং এটি সহীহুল বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, আবূ দাউদসহ একাধিক নির্ভরযোগ্য হাদিসগ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে।



