আদাবরে কিশোর গ্যাংয়ের দ্বন্দ্বে যুবক খুন, অভিযুক্ত ‘কব্জি কাটা গ্রুপ’
প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত রিপনের বিরুদ্ধেও দুটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার বিষয়ে জানেন না বলে দাবি করেছেন আদাবর থানার ওসি।
অপরাধ বিচিত্রা ডেস্ক: রাজধানীর আদাবরে কিশোর গ্যাংয়ের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে মোহাম্মদ রিপন ওরফে নিপু (৩৫) নামের এক যুবক খুন হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আদাবরের ১৭ নম্বর বালুর মাঠ এলাকায় তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকালে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার ত্রাস হিসেবে পরিচিত ‘কব্জি কাটা গ্রুপ’ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত রিপন ‘রাজু গ্রুপ’ নামে পরিচিত একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য এবং এর প্রধান রাজুর ছোট ভাই। মঙ্গলবার বিকেলে বালুর মাঠ এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বী ‘বেলচা মনির গ্রুপ’-এর সদস্যরা তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল পৌনে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম মেহেদী হাসান জানান, নিহতের বিরুদ্ধেও দুটি মামলা রয়েছে। তিনি বলেন, “রিপনের নামে ভোলার তজুমদ্দিন ও বোরহানউদ্দিন থানায় দুটি মামলা নথিভুক্ত আছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আদাবর এলাকায় কিশোর গ্যাংগুলোর মধ্যে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। নিহত রিপনের বড় ভাই ও ‘রাজু গ্রুপ’-এর প্রধান রাজুও কিছুদিন আগে প্রতিদ্বন্দ্বী ‘আয়েশা গ্রুপ’-এর হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ‘কব্জি কাটা গ্রুপ’-এর মূল হোতা আনোয়ার কারাগারে থাকলেও তার অন্যতম সহযোগী ‘বেলচা মনির’ বর্তমানে গ্রুপটি পরিচালনা করছে এবং এলাকায় মাদক ও চাঁদাবাজির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
তবে এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া বলেন, “আমার এলাকায় এ ধরনের কোনো ঘটনার খবর জানা নেই।” একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনা নিশ্চিত করলেও থানার ওসির এমন মন্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে।



