চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ঘুষ কেলেঙ্কারি: রাজস্ব কর্মকর্তাসহ দুজন দুদকের হাতে গ্রেপ্তার
নাসির হাওলাদার, চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি ফাঁদ অভিযানে রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব রায় এবং তার সহযোগী সারোয়ার উদ্দিনকে ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনা কাস্টমস বিভাগে চলমান দুর্নীতি ও হয়রানির চিত্র আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে।
চট্টগ্রামের ‘হোমল্যান্ড প্লাস্টিকস ইন্ডাস্ট্রিজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের আমদানি করা স্ক্র্যাপ পণ্যের চালান ছাড় করাতে গিয়ে এই ঘুষ কেলেঙ্কারির সূত্রপাত হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব রায় চালানটি আটকে দিয়ে ৩০,০০০ টাকা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দিলে পণ্য ছাড়তে বিলম্ব করা হবে এবং এক পর্যায়ে চালানটি নিলামে তোলার হুমকিও দেওয়া হয়।
ঘুষ দাবির অভিযোগ পেয়ে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান দুদকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন একটি ফাঁদ অভিযান পরিচালনা করে এবং ঘুষ গ্রহণের সময় রাজীব রায় ও তার সহযোগী সারোয়ার উদ্দিনকে টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের পর দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২-এর সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ বাদী হয়ে দণ্ডবিধি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের বিভিন্ন ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। অভিযানের সময় রাজীব রায়ের কাছ থেকে ঘুষের ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। জানা গেছে, সারোয়ার উদ্দিন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এই ঘটনায় কাস্টমস বিভাগের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, রাজীব রায় ও সারোয়ার উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
দুদক চেয়ারম্যান এক বিবৃতিতে বলেন, “ঘুষ-দুর্নীতি যেই করুক না কেন, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারি দপ্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে দুদক সর্বদা সক্রিয়।”
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল যে, ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা চলমান। রাজস্ব আদায়ে স্বচ্ছতা এবং দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করতে এ ধরনের অভিযান আরও জোরদার করা প্রয়োজন।



