সোনারগাঁয়ে তুচ্ছ বিবাদ: ডাব পাড়াকে কেন্দ্র করে বড় ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে ছোট ভাই খুন

বাড়ির গাছ থেকে ডাব পাড়া নিয়ে বিতণ্ডার জেরে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত বড় ভাই ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে।
মোঃ মোক্তার হোসাইন: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ডাব পাড়াকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের মর্মান্তিক পরিণতি ঘটেছে। বড় ভাই আক্তার হোসেনের ছুরিকাঘাতে ছোট ভাই ওমর ফারুক ওরফে খোকা (৩২) নিহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের আলাবদি গ্রামের কসাই বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে, যা পুরো এলাকায় শোকের ছায়া ফেলেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার দুপুরে ওমর ফারুক বাড়ির গাছ থেকে বড় ভাই আক্তার হোসেনকে না জানিয়ে কয়েকটি ডাব পাড়েন। এই তুচ্ছ ঘটনা নিয়েই দুই ভাইয়ের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি এবং পরে তীব্র বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। বিতণ্ডার একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আক্তার হোসেন তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে ওমর ফারুকের বুকে আঘাত করেন।
ছুরির আঘাতে ওমর ফারুক সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে সোনারগাঁ থানা পুলিশের একটি দল বিকেল ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করলেও ঘটনার মূল অভিযুক্ত আক্তার হোসেনকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পরপরই তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
এই ঘটনায় একটি অপ্রত্যাশিত মোড় নেয় যখন নিহতের পরিবার এটিকে হত্যাকাণ্ড বলতে নারাজ। তারা পুলিশের কাছে দাবি করে, দুই ভাইয়ের হাতাহাতির সময় এটি ‘দুর্ঘটনাবশত’ ঘটেছে এবং এ বিষয়ে তাদের কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। পরিবার ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি চেয়েছিল।
তবে সোনারগাঁ থানা পুলিশ জানিয়েছে, যেহেতু এটি একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু এবং আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট, তাই আইন অনুযায়ী ময়নাতদন্ত বাধ্যতামূলক। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং পলাতক আসামি আক্তার হোসেনকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।



