এম এ মান্নান: গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি অবৈধ রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিকেলে সাহারা সুপার মার্কেট সংলগ্ন এই গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তাসহ অন্তত পাঁচজন সদস্য গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন। বিপজ্জনক রাসায়নিকের মজুত থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ওই টিনশেড গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় এবং দাহ্য পদার্থের কারণে মুহূর্তেই তা বিধ্বংসী রূপ নেয়। খবর পেয়ে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। এ সময় আগুনের তীব্রতার মুখে পড়েন কর্মীরা, এতে সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা শাহিন আলম, পরিদর্শক জান্নাতুল নাইম, মো. শামিম ও নুরুল হুদাসহ পাঁচজন দগ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন এক ব্রিফিংয়ে জানান, অগ্নিকাণ্ডের শিকার গুদামটির মালিক বা ভাড়াটিয়ার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, “গুদামটিতে কোনো সাইনবোর্ড নেই এবং ভেতরে সোডিয়াম বাইকার্বোনেট ও ব্লিচিং পাউডারের মতো বিপজ্জনক রাসায়নিক অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে মজুত ছিল। রাসায়নিক সংরক্ষণের কোনো নিয়মই মানা হয়নি।” কোনো বৈধ কাগজপত্র না পাওয়ায় এটি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছিল বলে তিনি ধারণা করছেন।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মোহাম্মদ মামুন জানিয়েছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে টঙ্গীর পাশাপাশি অন্যান্য স্টেশন থেকেও একাধিক ইউনিট যোগ দিয়েছে। রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতির কারণে আগুন পুরোপুরি নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, আগুন আংশিক নিয়ন্ত্রণে এলেও ভেতরে দহন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
মো. ছালেহ উদ্দিন আরও নিশ্চিত করেন যে, দগ্ধদের মধ্যে চারজনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে তিনি জানান।



