অপরাধএক্সক্লুসিভদেশপ্রতারনাবাংলাদেশবিশ্লেষণমতামতসংগৃহীত সংবাদ

প্রতারকের পাতা ফাঁদ, ২২ লাখ টাকার দেনা শোধে পথে কফি বিক্রেতা নুরুন্নাহার

অনলাইন ডেস্ক: টাঙ্গাইলের মধুপুরের ব্যস্ত রাস্তার ধারে কফি বিক্রি করা নুরুন্নাহারকে দেখে প্রথম দৃষ্টিতে মনে হতে পারে, তিনি সংসারের ঘানি টানতে নামা আর দশজন সংগ্রামী নারীর মতোই একজন। কিন্তু তার এই সংগ্রামের পেছনের গল্পটি আরও মর্মান্তিক এবং এক নির্মম প্রতারণার শিকার হওয়ার দলিল। সংসার চালানোর জন্য নয়, বরং এক প্রতারকের চাপিয়ে দেওয়া ২২ লক্ষ টাকার বিশাল ঋণের বোঝা শোধ করতেই অসুস্থ শরীর নিয়ে আজ তিনি পথে নেমেছেন।

ঘটনার সূত্রপাত সুইজারল্যান্ডে পাড়ি জমানোর এক স্বপ্নকে ঘিরে। সেই স্বপ্নকেই পুঁজি করে শামীম আবেদীন নামের এক প্রতারক নুরুন্নাহারের কাছ থেকে ৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। কেবল অর্থ আত্মসাৎ করেই সে ক্ষান্ত হয়নি, বিশ্বাস অর্জনের নামে নুরুন্নাহারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে আরও বহু মানুষের সাথে প্রতারণা করে এবং তাদের টাকাও আত্মসাৎ করে। এখন সেই সব পাওনাদাররা টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে নুরুন্নাহারকে, যিনি নিজে শিকার হয়েও এখন দেনার দায়ে জর্জরিত।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এই প্রতারণার মূল হোতা শামীম আবেদীন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। অভিযোগ রয়েছে, সে চট্টগ্রামে বসেই নতুন নতুন প্রতারণার জাল বুনছে এবং বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয়ের ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগী নুরুন্নাহারকে মামলা না করার জন্য হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলে তাকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন নুরুন্নাহার।

বিনা দোষে একজন অসুস্থ নারীকে আজ ২২ লক্ষ টাকার দেনা মাথায় নিয়ে দিনের পর দিন রাস্তার ধারে কফি বিক্রি করে যেতে হচ্ছে। তার বিক্রি হওয়া প্রতিটি কফির কাপ যেন এক প্রতারকের পাপের দেনা শোধ করার একেকটি কিস্তি।

এই অমানবিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সচেতন মহল তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা প্রতারক শামীম আবেদীনকে অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে এবং ভুক্তভোগী নুরুন্নাহারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button