সকল প্রকার অনিষ্ট থেকে সুরক্ষায় একটি শক্তিশালী নববী আমল
ইসলামিক বিচিত্রা ডেস্ক: দৈনন্দিন জীবনে জানা-অজানা বহু বিপদ ও অনিষ্ট থেকে মহান আল্লাহর কাছে সুরক্ষা লাভের জন্য ইসলামে নির্দিষ্ট দোয়া ও আমলের নির্দেশনা রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর সাহাবীদের এমন একটি সহজ কিন্তু অত্যন্ত কার্যকরী আমলের কথা শিখিয়েছেন, যা সকাল-সন্ধ্যায় পাঠ করলে তা পাঠকারীর জন্য সকল প্রকার নিরাপত্তায় যথেষ্ট হয়ে যায়।
হাদিসে বর্ণিত এই আমলটি হলো পবিত্র কুরআনের শেষ তিনটি সূরা—সূরা আল-ইখলাস, সূরা আল-ফালাক এবং সূরা আন-নাস—প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় তিনবার করে পাঠ করা। এই সূরাগুলো “মু’আওয়িযাতাইন” (আশ্রয় প্রার্থনার দুই সূরা) এবং তাওহিদের ঘোষণাবাহী সূরা হিসেবে পরিচিত, যা মানুষকে জিন ও মানুষের কুমন্ত্রণা, হিংসা, জাদু এবং যাবতীয় شر (অনিষ্ট) থেকে সুরক্ষিত রাখে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি এই আমলটি নিয়মিত করবে, এটিই তার সবকিছুর (নিরাপত্তার) জন্য যথেষ্ট হবে।
আমলটির জন্য পঠিতব্য সূরাসমূহ:
১. সূরা আল-ইখলাস (একত্ব)
﷽قُلۡ هُوَ اللّٰهُ اَحَدٌ ۚ﴿١﴾ اَللّٰهُ الصَّمَدُ ۚ﴿٢﴾ لَمۡ يَلِدۡ ۙوَلَمۡ يُوۡلَدۡ ۙ﴿٣﴾ وَلَمۡ يَكُنۡ لَّهٗ كُفُوًا اَحَدٌ ﴿٤﴾ উচ্চারণ: ক্বুল হুওয়াল্লা-হু আহাদ। আল্লাহুস্ সামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ। ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।অর্থ: বলুন, তিনি আল্লাহ্, এক-অদ্বিতীয়। আল্লাহ্ হচ্ছেন ‘সামাদ’ (তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী)। তিনি কাউকেও জন্ম দেন নি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয় নি। আর তাঁর সমতুল্য কেউই নেই।
২. সূরা আল-ফালাক (ঊষা)
﷽قُلۡ اَعُوۡذُ بِرَبِّ الۡفَلَقِۙ ﴿١﴾ مِنۡ شَرِّ مَا خَلَقَۙ ﴿٢﴾ وَمِنۡ شَرِّ غَاسِقٍ اِذَا وَقَبَۙ ﴿٣﴾ وَمِنۡ شَرِّ النَّفّٰثٰتِ فِى الۡعُقَدِۙ ﴿٤﴾ وَمِنۡ شَرِّ حَاسِدٍ اِذَا حَسَدَ ﴿٥﴾উচ্চারণ: ক্বুল আ‘উযু বিরব্বিল ফালাক্ব। মিন শাররি মা খালাক্ব। ওয়া মিন শাররি গা-সিক্বিন ইযা ওয়াক্বাব। ওয়া মিন শাররিন নাফফা-সা-তি ফিল ‘উক্বাদ। ওয়া মিন শাররি হা-সিদিন ইযা হাসাদ।অর্থ: বলুন, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার রবের। তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট হতে। ‘আর অনিষ্ট হতে রাতের অন্ধকারের, যখন তা গভীর হয়। আর অনিষ্ট হতে সমস্ত নারীদের, যারা গিরায় ফুঁক দেয়। আর অনিষ্ট হতে হিংসুকের, যখন সে হিংসা করে।
৩. সূরা আন-নাস (মানবজাতি)
﷽قُلۡ اَعُوۡذُ بِرَبِّ النَّاسِۙ ﴿١﴾ مَلِكِ النَّاسِۙ ﴿٢﴾ اِلٰهِ النَّاسِۙ ﴿٣﴾ مِنۡ شَرِّ الۡوَسۡوَاسِ ۙ الۡخَـنَّاسِ ۙ﴿٤﴾ الَّذِىۡ يُوَسۡوِسُ فِىۡ صُدُوۡرِ النَّاسِۙ ﴿٥﴾ مِنَ الۡجِنَّةِ وَالنَّاسِ ﴿٦﴾উচ্চারণ: ক্বুল ‘আউযু বিরাব্বিন্না-স। মালিকিন্না-সি, ইলা-হিন্নাসি, মিন শাররিল ওয়াসওয়া-সিল খান্না-স, আল্লাযি ইউওয়াসউইসু ফী সুদূরিন না-সি, মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্না-স।অর্থ: বলুন, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি মানুষের রবের, মানুষের অধিপতির, মানুষের ইলাহের কাছে, আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট হতে; যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জিনের মধ্য থেকে এবং মানুষের মধ্য থেকে।
হাদিসের তথ্যসূত্র: (আবু দাউদ, হাদিস: ৫০৮২; তিরমিযী, হাদিস: ৩৫৭৫; সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৮২)।



