অপরাধঢাকাদেশপরিবেশবাংলাদেশবিশ্লেষণসংগৃহীত সংবাদ

রাজধানীতে চলাফেরায় সতর্কতা: যেভাবে এড়িয়ে চলবেন বিপদ ও প্রতারণার ফাঁদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা, স্বপ্ন ও সম্ভাবনার মহানগরী হলেও এর অলিগলিতে ওঁৎ পেতে আছে নানা বিপদ ও প্রতারণার ফাঁদ। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষ কিংবা নগরীর বাসিন্দারাও অসতর্ক মুহূর্তে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের শিকার হচ্ছেন। গণপরিবহন, জনবহুল রাস্তা কিংবা নির্জন স্থান—সর্বত্রই বাড়ছে ঝুঁকি। তাই রাজধানীতে নিরাপদে চলাচলের জন্য কিছু সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা অপরিহার্য।

সংঘবদ্ধ প্রতারণার নতুন কৌশল

অপরাধী চক্রগুলো প্রতিনিয়ত তাদের প্রতারণার কৌশল পরিবর্তন করছে। কিছু প্রচলিত ফাঁদ নিচে তুলে ধরা হলো:

  • ‘পাতানো বিবাদ’ থেকে সাবধান: ফার্মগেট বা এ ধরনের জনবহুল এলাকায় হঠাৎ কোনো ব্যক্তিকে মারধরের ‘পাতানো নাটক’ সাজিয়ে সাহায্য চাওয়া হয়। দয়াবশত কেউ সাহায্যে এগিয়ে এলেই চক্রটি তার সর্বস্ব কেড়ে নেয়।
  • ওভারব্রিজে কান্নার ফাঁদ: একইভাবে, ওভারব্রিজে কান্নার অভিনয় করে ‘মিসড কল’ দেওয়ার কথা বলে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে চক্রগুলো। পরবর্তীতে সেই নম্বরে যোগাযোগ করে ব্ল্যাকমেইল বা বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে সর্বস্বান্ত করার ঘটনা ঘটছে।

প্রলোভন ও ‘হানি ট্র্যাপ’-এর ফাঁদ

  • সন্দেহজনক ইশারা এড়িয়ে চলুন: রাস্তায় সুন্দরী বা বোরকা পরিহিত কোনো নারীর ইশারায় প্রলুব্ধ হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এটি ‘হানি ট্র্যাপ’ বা নারী দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার একটি মারাত্মক ফাঁদ হতে পারে, যার পরিণতিতে আপনাকে নির্জন স্থানে নিয়ে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী কেড়ে নেওয়া হতে পারে।
  • আপত্তিকর লিফলেট: শাহবাগ, মহাখালী বা যাত্রাবাড়ীর মতো স্থানে যানজটের সময় গাড়ির জানালায় নানা ধরনের আপত্তিকর বা লোভনীয় প্রস্তাব সম্বলিত লিফলেট দেওয়া হয়। এসব প্রস্তাবে সাড়া দেওয়া থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

পরিবহন কেন্দ্র ও যাত্রাপথে সতর্কতা

  • জুয়াড়ি চক্র থেকে দূরত্ব: গাবতলী, সায়েদাবাদ বা সদরঘাটের মতো টার্মিনালগুলোতে তাস বা লুডু খেলার আসর এড়িয়ে চলতে হবে। এগুলো মূলত জুয়াড়ি চক্রের পাতা ফাঁদ।
  • অপরিচিত সহযাত্রী: যাত্রাপথে অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে আলাপচারিতা সীমিত রাখা এবং তাদের দেওয়া কোনো খাবার বা পানীয় গ্রহণ না করা বিচক্ষণতার পরিচয়।
  • ঝুঁকিপূর্ণ বাহন ও রুট বর্জন: ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ, কম যাত্রী থাকা লঞ্চ কিংবা অনিরাপদ স্পিডবোটে যাতায়াত মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এসব স্থানে ছিনতাই বা ডাকাতির ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে।
  • নির্জন পথে সতর্কতা: হাঁটাচলার ক্ষেত্রে নির্জন গলি বা দুটি বাসের মধ্যবর্তী অন্ধকার স্থান এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এসব স্থানে ছিনতাইকারীরা ওঁৎ পেতে থাকে।

সর্বোপরি, ঢাকা শহরে চলাফেরার সময় নিজের পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে সর্বদা সচেতন থাকা এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। সামান্য একটু সতর্কতা অনেক বড় বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button