অপরাধদেশবাংলাদেশবিশ্লেষণরাজনীতিরাজশাহীসংগঠনসংগৃহীত সংবাদ

রাজশাহী চিড়িয়াখানা এলাকায় ভূমি দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ: কাঠগড়ায় বিএনপি নেতারা

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা সংলগ্ন এলাকায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখল, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ভাটাপাড়া এলাকার আতাউর রহমান বাঁধন ও মো. মোস্তাক আলীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন জমির প্রকৃত মালিক দাবিদার ওয়ারিশরা। তাদের অভিযোগ, বিএনপির সাবেক এমপি ও নেতা মিজানুর রহমান মিনুর নাম ও রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে এই চক্রটি তাদের পৈতৃক সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে।

আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দখল

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, বিতর্কিত এই জমিটি নিয়ে আদালতে মামলা (মামলা নং ৩৪/১২) চলমান রয়েছে এবং জমির ওপর জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারা জারির আদেশও রয়েছে। জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে দসি মিস্ত্রির নামে সিএস, আরএস এবং এসএ—তিনটি খতিয়ানেই রেকর্ডের প্রমাণ রয়েছে বলে তারা দাবি করেন। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বাঁধন ও মোস্তাক তাদের ‘টোকাই বাহিনী’ নিয়ে তালাবদ্ধ জায়গার তালা ভেঙে জমিটি দখল করে সেখানে অবৈধভাবে গ্যারেজ ও হোটেল নির্মাণ করেছে।

শুধু তাই নয়, চিড়িয়াখানার লেক এবং টিকিট কাউন্টারও তারা অবৈধভাবে দখল করে টিকিট বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

রাজনৈতিক প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এই সকল দখলবাজি, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার পেছনে মূল আশ্রয়দাতা হিসেবে কাজ করছেন বিএনপির প্রভাবশালী নেতা মিজানুর রহমান মিনু। তার নাম ব্যবহার করেই বাঁধন ও মোস্তাক চক্রটি জমির প্রকৃত ওয়ারিশদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে এবং হয়রানি করছে। ভুক্তভোগীরা প্রশ্ন তুলেছেন, “আদালতে মামলা চলমান থাকা একটি জমি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন কীভাবে লিজ প্রদান করে?”

তারা আরও অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত আতাউর রহমান বাঁধন গত ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকে ও সাবেক কাউন্সিলর মো. রজব আলীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হিসেবে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এবং ক্ষমতার পালাবদলের পর এখন বিএনপির ছত্রছায়ায় নতুন করে দখলবাজি শুরু করেছেন।

প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

জমির প্রকৃত ওয়ারিশরা এই বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাহায্য কামনা করেছেন এবং তার অবহেলার কারণেই আজ তারা ভুক্তভোগী বলে দাবি করেছেন। তারা বলেন, “এই জমি দখল ও চাঁদাবাজির জন্যই কি দেশের মানুষ সংগ্রাম করেছিল? এ দেশে কি আইনের শাসন কখনোই প্রতিষ্ঠিত হবে না?”

এই চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভুক্তভোগীরা প্রশাসন, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের, বিশেষ করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, সিটি কর্পোরেশন, দখলবাজ বাঁধন, মোস্তাক এবং তাদের আশ্রয়দাতা মিজানুর রহমান মিনুর বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবারটি চিড়িয়াখানা এলাকায় সংঘটিত সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে একটি সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শক্ত হাতে দমনের জন্য সকলের সম্মিলিত সহায়তা কামনা করেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button