ইসলাম ধর্ম

জিন জাতি: মানব সাদৃশ্য এক বিস্ময়কর সৃষ্টি

ইসলামিক বিচিত্রা ডেস্ক: জিন আল্লাহ তা’আলার এক বিশেষ সৃষ্টি, যারা মানুষের মতোই জ্ঞান ও চেতনা রাখে কিন্তু মানুষের দৃষ্টির অন্তরালে থাকে। আরবি ‘জিন’ শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো গুপ্ত বা অদৃশ্য। এ কারণেই তাদের এমন নামকরণ করা হয়েছে। কুরআন ও সহিহ হাদিসের অকাট্য প্রমাণ দ্বারা জিন ও ফেরেশতার অস্তিত্ব প্রমাণিত, এবং এটি অস্বীকার করা ইসলামি বিশ্বাস মতে কুফরির সমতুল্য।

সৃষ্টি ও প্রকৃতি

মানব সৃষ্টির মূল উপাদান যেমন মাটি, তেমনি জিনদের সৃষ্টি করা হয়েছে অগ্নি থেকে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, “আর তিনি জিনকে সৃষ্টি করেছেন আগুনের শিখা দিয়ে।” (সূরা আর-রহমান: ১৫)।তাদের মধ্যেও মানুষের মতো নর-নারী রয়েছে এবং বংশবৃদ্ধির ধারা বিদ্যমান। জিনদের বিবেক, বুদ্ধি এবং ভালো-মন্দ বিচার করার ক্ষমতা রয়েছে।

জিন ও শয়তানের সম্পর্ক

ইসলামি পরিভাষায় জিনদের মধ্যে যারা অবাধ্য ও দুষ্ট শ্রেণীর, তাদের ‘শয়তান’ বলা হয়। অধিকাংশ ইসলামি চিন্তাবিদদের মতে, সকল জিনই ইবলিস শয়তানের বংশধর। জিনদের মধ্যে মুমিন ও কাফির উভয় শ্রেণীই রয়েছে। যারা ঈমানদার, তারা সাধারণভাবে জিন হিসেবে পরিচিত, কিন্তু কাফির জিনদের শয়তান বলা হয়।

তবে এ বিষয়ে ভিন্নমতও পাওয়া যায়। প্রখ্যাত সাহাবি ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) থেকে বর্ণিত আছে যে, জিনেরা একটি ভিন্ন প্রজাতি এবং তারা শয়তানের বংশধর নয়। এই মতানুসারে, জিনেরা মৃত্যুবরণ করে এবং তাদের মধ্যে ঈমানদার ও কাফির উভয়ই আছে। অন্যদিকে, ইবলিসের সন্তানদের শয়তান বলা হয় এবং তারা ইবলিসের সাথে তার নির্ধারিত সময় পর্যন্ত জীবিত থাকবে।

অস্তিত্বে বিশ্বাস

জিন জাতির অস্তিত্বে বিশ্বাস রাখা অদৃশ্যের প্রতি ঈমানের একটি অংশ। পবিত্র কুরআনের ‘সূরা আল-জিন’ নামে একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা রয়েছে, যেখানে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও কুরআনের বিভিন্ন স্থানে প্রায় পঞ্চাশবার জিনের উল্লেখ পাওয়া যায়, যা তাদের অস্তিত্বের বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button