ইসলাম ধর্ম

কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ঐশী নির্দেশনা আল্লাহর নেয়ামত বর্ণনা করুন: সূরা আদ-দোহার শিক্ষা

ইসলামিক বিচিত্রা ডেস্ক: পবিত্র কুরআনের সূরা আদ-দোহায় মহান আল্লাহ তাঁর রাসুল (সা.)-কে এবং তাঁর মাধ্যমে সমগ্র মানবজাতিকে যে তিনটি প্রধান নির্দেশনা দিয়েছেন, তার মধ্যে শেষটি হলো আল্লাহর নেয়ামতসমূহ মানুষের সামনে বর্ণনা ও স্মরণ করা। এটি কেবল একটি সাধারণ উপদেশ নয়, বরং কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এক ঐশী নীতিমালা।

ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, এখানে ‘নেয়ামত’ শব্দটি অত্যন্ত ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এটি কেবল পার্থিব ধন-সম্পদ, স্বাস্থ্য বা সুযোগ-সুবিধাকেই বোঝায় না, বরং পরকালে আল্লাহ প্রদত্ত পুরস্কার ও সম্মানকেও অন্তর্ভুক্ত করে। (তাফসীরে সা’দী)

কিন্তু কীভাবে এই নেয়ামত প্রকাশ করতে হবে? এর বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। প্রথম এবং প্রধান উপায় হলো, আন্তরিকভাবে এই স্বীকৃতি দেওয়া যে জীবনে প্রাপ্ত সকল সুযোগ-সুবিধা ও সাফল্য একমাত্র মহান আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়ার ফল। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে এই নেয়ামতের সর্বোত্তম স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।

দ্বিতীয়ত, বিশেষ নেয়ামত প্রকাশের পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে। যেমন—জ্ঞান, হেদায়েত বা নবুয়তের মতো নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সর্বোত্তম মাধ্যম হলো দ্বীনের প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে তা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া।

তাফসিরকারকগণ আরও উল্লেখ করেন যে, আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যদি আপনার প্রতি কোনো অনুগ্রহ করে, তবে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোও আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি অংশ। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর একটি বিখ্যাত হাদিস বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, “যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না, সে আল্লাহর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।” (আবু দাউদ: ৪৮১১, তিরমিযী: ১৯৫৫)

সুতরাং, সূরা আদ-দোহার এই নির্দেশনাটি আমাদেরকে একটি ইতিবাচক ও কৃতজ্ঞতাপূর্ণ জীবনযাপনে উৎসাহিত করে, যেখানে নিজের প্রাপ্তিকে স্বীকার করার পাশাপাশি অন্যের অনুগ্রহকেও সম্মান জানানো হয়। (তাফসীরে কুরতুবী)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button