হাবিবুল্লাহ মিজান: রাজধানীর রাজারবাগে অবস্থিত বিএনকে হাসপাতালের বিরুদ্ধে বকেয়া বিলের জেরে এক তরুণীর লাশ আটকে রাখার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। পিংকি শরীফ (১৮) নামের ওই তরুণীর মৃত্যুর পর প্রায় দেড় লক্ষ টাকা পরিশোধ না করায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মরদেহ হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
পিংকির বাবা, পেশায় নির্মাণ শ্রমিক রিংকু শরীফ কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, সাভার থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মেয়েকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে এক দালালের প্রলোভনে পড়ে কম খরচের আশ্বাস পেয়ে পিংকিকে বিএনকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু ভর্তির পরই তার মেয়ের অবস্থার অবনতি হতে থাকে এবং বুধবার সকালে সে মারা যায়।
তিনি বলেন, “মেয়ের চিকিৎসার জন্য ধার-দেনা করে এবং মানুষের কাছে চেয়ে আগেই ১৫ হাজার টাকা হাসপাতালে জমা দিয়েছি। কিন্তু পিংকি মারা যাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নতুন করে আরও ৯৩ হাজার টাকার একটি বিল ধরিয়ে দেয়। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে, মেডিসিন ও অন্যান্য খরচসহ মোট প্রায় দেড় লক্ষ টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত লাশ দেওয়া হবে না।”
রিংকু শরীফ আরও জানান, “আমরা অসহায় মানুষ। জমি বন্ধক রেখে অনেক কষ্টে আরও ৪০ হাজার টাকা জোগাড় করেছি। সকাল থেকে তাদের অনুরোধ করছি, কিন্তু তারা এক টাকাও ছাড় দিতে রাজি নয়।”
এদিকে, পিংকির মৃত্যুর প্রকৃত সময় নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। পিংকির আত্মীয় জিরু সর্দার জুয়েল অভিযোগ করেন, “পিংকি আসলে কখন মারা গেছে, তা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভিন্ন ভিন্ন কথা বলছে। তাকে আইসিইউতে নেওয়ার পর আমাদের আর দেখতে দেওয়া হয়নি। অথচ তারা আমাদের বলছিল, পিংকি ভালো আছে এবং খাওয়া-দাওয়া করছে।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনকে হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ গণমাধ্যমকে জানান, পিংকি সকাল ৮টার দিকে মারা গেছেন। তবে বকেয়া বিলের বিষয়ে তিনি কোনো সুস্পষ্ট মন্তব্য না করে বলেন, “বিল দেখে বলতে হবে।”
এই ঘটনায় অসহায় পরিবারটি তাদের মেয়ের মরদেহ ফিরে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ এবং গণমাধ্যমের সহায়তা কামনা করেছে।



