অপরাধদুর্নীতিদেশপ্রতারনাপ্রশাসনবাংলাদেশ

দুর্নীতি ও প্রতারণায় কোটি টাকার অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাৎ: ভুক্তভোগীর অভিযোগ জেলা প্রশাসন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের কোটি টাকার অর্থ দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (ভূমি অধিগ্রহণ-৩ শাখা), কানুনগো, একাধিক সার্ভেয়ার, তেজগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।বুধবার (১৪ আগস্ট ২০২৫) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মো. নুরুল ইসলাম ও তার আইনজীবী মো. ইমদাদুল হক কাজী এ অভিযোগ করেন।তারা জানান, তেজগাঁও থানাধীন তেজগাঁও শিল্প এলাকা মৌজার জে.এল নং-৬, সিটি দাগ নং-৫৯০৬ দাগের ০.৩৬৮ একর জমি এল.এ কেস নং ০২/২০১৯-২০২০ এর মাধ্যমে অধিগ্রহণ করা হয়। এ জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪ কোটি ১ লাখ ২৮ হাজার ৯৫৩ টাকা ৭৬ পয়সার নোটিশ দেওয়া হয় মো. আব্দুল জব্বার নামে এক ব্যক্তিকে।কিন্তু অভিযোগকারীর দাবি, আব্দুল জব্বার কখনোই উক্ত দাগে জমি ক্রয় করেননি, এমনকি তার নামে ওই জমির কোনো দলিলও নেই। বরং মো. আবুল কালামসহ ৩১ জনের মাধ্যমে একটি জাল ১৪৭ নম্বর দলিল তৈরি করে অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।ভুক্তভোগী নুরুল ইসলাম বলেন, “সরকারি অধিগ্রহণের অর্থ স্বত্ববিহীন ও জাল দলিলধারী লোকদের মধ্যে ভাগাভাগি করে দিয়েছে কর্মকর্তারা। অথচ আমি প্রকৃত মালিক হয়েও কোনো নোটিশ বা ক্ষতিপূরণ পাইনি।”তিনি আরও জানান, ভূমি অধিগ্রহণ অফিসে বারবার যোগাযোগ করেও কোনো তথ্য পাননি। বরং কর্মকর্তারা তাকে ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন। ২০২২ সালে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়ার পরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।নুরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, “শুনানি ছাড়াই ২০২৪ সালের ২৮ মে রাসেল, নাহিদুল ও তাজুল ইসলামের ওয়ারিশদের নামে ৩৮ লাখ ১৬ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। অথচ আমার নামে কোনো নোটিশই দেওয়া হয়নি।”তিনি আরও বলেন, “আমি বিষয়টি নিয়ে এল.এ অফিসে গেলে সার্ভেয়ার হাফিজ সাহেব বলেন, ‘এ যুগে টাকা কাণ্ডা করা সম্ভব নয়।’ এরপর আমি প্রতিপক্ষ আব্দুল জব্বারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার দলিলের জমি দেখিয়ে নিজের নামে টাকা উত্তোলন করেছেন।”অভিযোগকারী নুরুল ইসলাম বলেন, “আমি একজন অশিক্ষিত ও সাধারণ মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে অধিগ্রহণের টাকা না পেয়ে আমি মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি সরকারের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত মালিক হিসেবে আমার প্রাপ্য অর্থ পাওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”ভুক্তভোগীর অভিযোগ, জেলা প্রশাসন অফিসের কর্মকর্তারা যোগসাজশে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে বড় ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির জন্ম দিয়েছেন। বিষয়টি উচ্চপর্যায়ের তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের ন্যায্য অর্থ ফেরতের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button