আবু ত্বহা আদনানের শ্যালকের পাল্টা অভিযোগ: সাবিকুন নাহার সারাহকে মুবাহালার চ্যালেঞ্জ
অনলাইন ডেস্ক: ইসলামী বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের পারিবারিক সংকট এবার নতুন দিকে মোড় নিয়েছে। আদনানের স্ত্রী সাবিকুন নাহার সারাহর প্রেস কনফারেন্স এবং আদনানের ফেসবুক পোস্টের পর এবার মুখ খুলেছেন সারাহর ছোট ভাই তামিম মোহাম্মদ রেজা। এক দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে তিনি তার বোনের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, ভণ্ডামি এবং আদনানের সম্মানহানির চেষ্টার মতো গুরুতর সব অভিযোগ তুলেছেন এবং প্রকাশ্যে মুবাহালার (ইসলামী রীতিতে একে অপরকে অভিশাপ দেওয়া) চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন।
শাশুড়ি ও সতীনদের নিয়ে কুমন্তব্যের অভিযোগ
তামিম তার পোস্টে দাবি করেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাদের বাসায় প্রথম সাক্ষাতেই সাবিকুন নাহার সারাহ তার শাশুড়ি, ননদ এবং আদনানের প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে চরম আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন। তিনি লেখেন, “আপনি আমার আম্মুকে বলেছিলেন আন্টি আদনানের পরিবারের সবাই ছোটলোক, আদনান ভাইয়ের আম্মু… এত এত কৃপণ যে, পেঁয়াজও মেপে মেপে ব্যবহার করেন… নির্লজ্জ বেহায়া, ছেলেকে চুষে খেয়ে ফেলছে।”
তামিম আরও অভিযোগ করেন, সারাহ তার ননদকে ‘জিন্সের প্যান্ট পরা’ বলে মিথ্যাচার করেছেন, যদিও তিনি পর্দানশীন। এছাড়া আদনানের প্রথম স্ত্রীকে ‘কুৎসিত’ এবং তার সন্তানদের ‘ফকিন্নির মতো’ বলেও অপমান করেছেন।
স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞতা ও নিজের অতীত গোপনের অভিযোগ
পোস্টে তামিম উল্লেখ করেন, সারাহ তার মাকে বলেছেন, “আদনান ক্ষেত ছিল, তাকে আমি স্মার্ট বানিয়েছি… তার কিছুই ছিল না, আমি ঢাকাতে তাকে আমার ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।” এমনকি নিজের মৃত বাবাকে নিয়েও সারাহ কুমন্তব্য করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তামিম আরও দাবি করেন, সারাহ তার স্ত্রীর কাছে নিজের আগের দুটি সংসারের কথা গোপন করে একটি সংসারের কথা বলেছিলেন এবং প্রথম ঘরের সন্তানদের সাথে তার কোনো যোগাযোগ বা মায়া-মমতা নেই বলেও উল্লেখ করেন।
দ্বৈত জীবনযাপনের অভিযোগ
তামিম তার বোনের দ্বৈত জীবনযাপন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি লেখেন, “আপনি সাবিকুন নাহার সারাহ প্রেস কনফারেন্সে আসেন চশমা দিয়ে পরিপূর্ণ পর্দা করে, অথচ যখন ঘুরতে বের হন চোখকে আকর্ষণীয়ভাবে সাজিয়ে ঢং ঢং করে ঘুরেন।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, সারাহ সুগন্ধি ব্যবহার করে বাইরে যান, ক্লাস নেওয়ার সময় হাতমোজা পরলেও বাইরে ঘুরতে গেলে তা পরেন না এবং কারুকার্য করা পাতলা বোরকা পরেন, যা নিয়ে আদনানের সাথে তার একাধিকবার ঝগড়াও হয়েছে।
আদনান কেন দ্বিতীয় বিয়ে করতে চেয়েছিলেন?
তামিম তার পোস্টে দাবি করেন, আদনান মূলত সারাহর দেওয়া “মানসিক যন্ত্রণা” থেকে মুক্তি পেতেই দ্বিতীয় বিয়ের (সুলাসা) পথ খুঁজেছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, সারাহ আদনানকে তার রংপুরের পরিবারের কাছে যেতে বাধা দিতেন, মাসের ২৫ দিন ঢাকায় আটকে রাখতেন এবং তার মা ও প্রথম স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে অকথ্য ভাষায় কথা বলতেন।
তিনি আরও লেখেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আদনান কক্সবাজারে একটি প্রোগ্রামে এলে সারাহ মাহরাম ছাড়াই দুধের বাচ্চা ফেলে রেখে একা ফ্লাইটে কক্সবাজার চলে আসেন।
মুবাহালার চ্যালেঞ্জ
সবশেষে, তামিম তার বোনকে একজন “সেলিব্রেটি” হওয়ার আকাঙ্ক্ষী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তিনি সমাধানের পথ না খুঁজে নোংরা প্ল্যাটফর্ম বেছে নিয়েছেন। তিনি তার করা প্রতিটি অভিযোগ খণ্ডন করার জন্য সারাহকে চ্যালেঞ্জ জানান এবং বলেন, “আর যদি এইসব বিষয় মিথ্যা দাবি করেন তাহলে প্রকাশ্যে মুবাহালা করবেন, আমিও মুবাহালা করব। দেখি আপনার গাটস কত!”
এই পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্য দিয়ে আবু ত্বহা আদনানের পারিবারিক সংকট আরও ঘনীভূত হলো, যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।



