রাসেল ফকির, ময়মনসিংহ ব্যুরো: ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার ৩নং কাকনি ইউনিয়নের গোয়াতলা শসার বাজার এখন মাদকের এক অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এখানে দিন-দুপুরেই প্রকাশ্যে চলছে গাঁজা, ইয়াবা ও বরির মতো মারাত্মক মাদকদ্রব্যের রমরমা ব্যবসা। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগাতেই এই অবৈধ কর্মকাণ্ড চললেও তাদের রহস্যজনক নীরবতা নিয়ে জনমনে তীব্র প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এলাকার একাধিক সূত্র জানায়, গোয়াতলা শসার বাজারের দোকানপাটগুলো মধ্যরাত পর্যন্ত খোলা রাখার আড়ালে চলে মাদক কেনাবেচার জমজমাট আসর। রাত একটা থেকে দুটো পর্যন্ত মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের আনাগোনায় বাজারটি এক ভিন্ন রূপ ধারণ করে। এর ফলে এলাকায় চুরি, ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কার্যকলাপ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে চরম অস্থিরতা ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগের তীর সরাসরি দুজনের দিকে—গোয়াতলা শসার বাজারের হানিফ (পিতা: ইদ্রিস আলী) এবং পার্শ্ববর্তী তালদিঘি এলাকার সোহেল। এলাকাবাসীর মতে, এই দুজনই এলাকার মাদক ব্যবসার মূল নিয়ন্ত্রক বা ‘গডফাদার’। দীর্ঘদিন ধরে তারা এলাকায় নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে এই সর্বনাশা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ভুক্তভোগীরা জানান, তাদের বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে ৩নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সদস্য মোঃ লিটন মিয়ার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, বিষয়টি তাকে বারবার জানানো হলেও তিনি কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে উদ্যোগী হননি। এর ফলে মাদকচক্রের সাথে জনপ্রতিনিধিদের কোনো অশুভ আঁতাত রয়েছে কি না, সেই সন্দেহও দানা বাঁধছে সাধারণ মানুষের মনে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “প্রতিদিন আমাদের চোখের সামনে তরুণরা মাদক কিনে ধ্বংসের পথে যাচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টো হুমকির শিকার হতে হয়। প্রশাসন যদি এখনই কঠোর না হয়, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাঁচানো যাবে না।”
এই পরিস্থিতিতে, এলাকার সচেতন নাগরিক এবং সাধারণ মানুষ তারাকান্দা থানা প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাদের সম্মিলিত দাবি, অবিলম্বে এই মাদকচক্রকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে। অপরাধীদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনের আওতায় এনে গোয়াতলা বাজারকে মাদকমুক্ত করে একটি সুস্থ ও নিরাপদ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।



