অপরাধএক্সক্লুসিভচট্টগ্রামচট্টগ্রাম বিভাগবাংলাদেশবিভাগ

পুলিশের ওসি, এসআই, এএসআই সোর্স সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা

মুহাম্মদ জুবাইর: চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থানার অফিসার ইনচার্জ , পুলিশের চার উপ-পরিদর্শকসহ (এসআই) দশ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং-০১ মামলার আবেদন করেন নগরের পাহাড়তলী থানার সিগন্যাল কলোনী নিবাসী আবুদল মতিনের কণ্যা ও‌ জাকির হোসেনের স্ত্রী কোহিনুর বেগম।যার বিশেষ মামলা নং- ৮৪/২০২৫ইং (পাহাড়তলী)।মামলার আসামিরা হলেন- পাহাড়তলী থানার অফিসার ইনচার্জ জসিম উদ্দীন, অপারেশন অফিসার (সেকেন্ড অফিসার), এসআই জাহিদ হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ জামাল উদ্দিন খান, এসআই মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, এসআই মজিবুর রহমান, এসআই আব্দুল্লা আল রিয়াদ, এএসআই আবু সাহেদ, এএসআই আমিনুল হক ভূঁইয়া, এএসআই জহিরুল ইসলাম ও পাহাড়তলী থানার ফিরোজশাহ কলোনীর মোবারক হোসেনের ছেলে সোর্স শামসুল হক রানা (৩০)। মামলার বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট বখতেয়ার উদ্দিন জানান এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে পাহাড়তলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ ও এসআই, এএসআইসহ দশজনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়। আগামী ৪/১১/২০২৫ মামলাটির শুনানি রয়েছে।মামলার এজাহারে বলা হয়, বাদী কোহিনুর বেগমের স্বামী মোঃ জাকির হোসেন ৭ সেপ্টেম্বর সাড়ে ছয়টার দিকে পাহাড়তলী থানাধীন পেয়ারবক্স কলোনীস্থ জয়া ফার্মেসী নামক ঔষধের দোকান থেকে ওষুধের জন্য গেলে পাহাড়তলী থানা সোর্স পাহাড়তলী থানার ফিরোজশাহ কলোনীর মোবারক হোসেনের ছেলে সোর্স শামসুল হক রানার দেখানো ও সনাক্ত মতে পাহাড়তলী থানার অপারেশন অফিসার সেকেন্ড অফিসার জাহিদ হোসেন এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ আটক করে বাদীর বসতঘরে নিয়ে ঘরের প্রতিটি কোনায় তল্লাশী চালায়, তল্লাশীকালে তারা বসত ঘরের আসবাবপত্র ও কাঁচের জিনিসপত্র ভাংচুরসহ ক্ষতি সাধন করে এবং নগদ পাঁচ লক্ষ নিয়ে যায় বলে অভিযোগ বাদীর। সেইসময় ঘরের অভ্যন্তরে কোন‌কিছু না পেয়ে বাদীর স্বামী মোঃ জাকির হোসেনকে নিয়ে বাদীর বসতঘরের ছাদে সেখানেও কোনধরনের অবৈধ জিনিসপত্র না পেয়ে বাদীর স্বামীকে নিয়ে বের হয়ে যায়। এর ৪৫ মিনিট পর পুনরায় তাঁরা বাদীর স্বামীকে নিয়ে এসে তল্লাশি চালায় । এবারো বসত ঘরে কোন কিছু না পেয়ে বাদীর বসতঘরের রক্ষিত সিসি ক্যামেরার , DVR মেশিন ও বক্স খুলে নিয়া যায় পাহাড়তলী থানা পুলিশ। বাদীর স্বামীকে আটকের বিষয়টি মোবাইল ফোনে তার পুত্রবধুর হতে মুঠোফোনে জেনে পুলিশ সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করা হলে পাহাড়তলী থানার অফিসার ইনচার্জ জসিম উদ্দীন বাদীকে স্বামী আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সেই সময় পাহাড়তলী থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই জাহেদ হোসেন ১ লক্ষ টাকার উপরে টাকা দাবী করেন। এসময় তিনি বলেন তোমার স্বামীকে আমরা আটক করেছি এক লক্ষ টাকার উপরে দিলে তোমার স্বামীকে শুধুমাত্র অস্ত্র মামলায় চালান দিব, ১ লক্ষ টাকার কম দিলে তাকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের মামলায় বা সন্ত্রাস বিরোধী জঙ্গী মামলায় চালান করে দিব। তখন তোমার স্বামীর জামিন হবে না মর্মে হুমকী প্রদান করে। একি সাথে বাদীকে থানায় না যাওয়া কথাও বলেন। থানায় গেলে ওসি সাহেব গ্রেফতার করবে মর্মে হুমকী দেয় অত্র আমলার বাদীকে। বাদী এসময় তার পিত্রালয়ে নোয়াখালী থাকায় মুঠোফোনে বারবার তার স্বামীকে ছাত্রলীগের ও জঙ্গী মামলা না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে পুনরায় পুলিশ সদস্যকে ,স্বামীকে বাঁচানোর জন্য ১ লক্ষ টাকার উপরে ঘুষ দাবী করে এবং ঘুষ আদায়ের লক্ষ্যে বাদীর স্বামীকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি, লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। বাদী আর্থিকভাবে সাবলম্বী না হওয়ায় অসহায় অবস্থার কারণে ১নং আসামীর দাবীকৃত ১ লক্ষ টাকার উপরে ঘুষ দিতে অস্বীকার করলে বাদীর স্বামীকে মিথ্যা বানোয়াট কল্পকাহিনী সাজিয়ে পূর্ব হতে অবৈধভাবে মজুদকৃত অস্ত্র দিয়ে বাদীর স্বামীর নিকট উদ্ধার দেখিয়া সম্পূর্ণ মনগড়া ভিত্তিহীন অভিযান দেখিয়ে পাহাড়তলী থানার মামলা নং-০৮ (০৯)২৫, জি.আর- ১৭৯/২৫, ধারা- 19A The Arms Act-1878 রুজু করিয় উক্ত মামলায় চালান দিয়া বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে। বাদী কোহিনুর বেগম জানান, সোর্স শামসুল হক রানা এই ঘটনার ৪/৫ মাস পূর্ব হতে বাদীর স্বামী জাকির হোসেনের পরিচালিত রেললাইন সংলগ্ন ভাড়া হইতে ৩টি রুম তাকে দিয়ে দেওয়ার জন্য দাবী করে। অন্যথায় ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা নগদ চাঁদা দাবী করে আসছিলেন। উক্ত ঘর দখল করার সোর্স শামসুল হক রানা বিভিন্ন সময় পুলিশ সদস্যদের দিয়ে হুমকি দমকী দিয়ে আসছিলেন। এছাড়াও সোর্স শামসুল হক রানা, বাদীর স্বামী ও ছেলেকে পথে-ঘাটে সরাসরি আবার কখনো মোবাইল ফোনে হুমকী দিয়ে আসছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। ঘর ছাড়ে না দিলে’ কঠিন পরিণতি ভোগ করিতে হইবে মর্মে হুমকী প্রদান করতো বারবার এই সোর্স। বাদী বলেন অনুরূপ ভাবে আমার স্বামীকে আটকের ২০/২৫ দিন পূর্বে সোর্স শামসুল হক রানা তার ব্যবহৃত মুঠোফোন হতে আমার ছেলে বাবলুর ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিয়ে অকথ্য ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও ভীতিকর কঠিন পরিণতির হুমকী দেয়। একই সাথে আমার বাড়ী হতে ভাড়াঘর খোঁজে। আমার ছেলে ভাড়াঘর নাই মর্মে জানালে রাগে ক্ষোভে পাহাড়তলী থানা পুলিশ এর সহযোগীতায় আমার স্বামীর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে আমার স্বামীকে গ্রেফতার করে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button