সিদ্ধিরগঞ্জে মাদক ও ছিনতাই চক্রের দৌরাত্ম্য: কড়া পদক্ষেপ দাবি এলাকাবাসীর
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসা ও ছিনতাই চক্রের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই চক্রের সদস্যরা মাদক ব্যবসা, ছিনতাই এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে এলাকার শান্তি বিঘ্নিত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, জেলা ডিবি ও র্যাব-১১ এর কাছে এই চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ অনুযায়ী, রাকিব (পিতার নাম: খোকন), অয়ন (আমিনুল মাস্টারের ছেলে), মিতুল এবং জুবায়ের (পিতার নাম: আব্দুল বাতেন) নামের ব্যক্তিরা তাদের শেল্টারদাতাদের সহায়তায় এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। আদমজী ইপিজেডের কর্মীরাসহ সাধারণ মানুষ তাদের কারণে নিরাপদে চলাচল করতে পারছেন না।
চক্রের কার্যক্রম ও ভুক্তভোগীদের ভীতি:
এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, গত কয়েক বছর ধরে এই চক্র মাদক সরবরাহ ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মাদক ও ছিনতাই সংক্রান্ত মামলার অভিযোগও রয়েছে। অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, চক্রের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে বা অভিযোগ করলে, তারা অভিযোগকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের হুমকি ও প্ররোচনা দেয়। এই কারণে ভুক্তভোগীরা আতঙ্কে থাকেন এবং প্রতিকার চাইতে ভয় পান।
শেল্টারদাতাদের নাম:
স্থানীয় সূত্র আরও জানিয়েছে যে, এই চক্রের শেল্টারদাতা হিসেবে মেহেদী (আব্দুল হাইয়ের ছেলে), আব্দুল রব কুটির ছেলে, আরাফাত রহমান বাবা ও তার ভাই ইমরান, এবং ফরহাদসহ আরও অনেকে জড়িত। তারা এলাকায় প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অপরাধ সংঘটনের স্থানসমূহ:
অভিযোগে উল্লেখিত ঘটনাস্থলগুলোর মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ পুল, পাগলা বাড়ি কেলান পাড় থেকে পাওয়ারহাউজ কাঠের পুল, ডিএনডি লেক পার, মিজমিজি পাগলাবাড়ি (মসজিদের পাশে), কয়েল ফ্যাক্টরির পাশের মাঠ এবং মজিব বাগ এলাকায় এই চক্রের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে।
এলাকাবাসীর দাবি ও প্রশাসনের আশ্বাস:
এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছেন:
১. সিদ্ধিরগঞ্জ থানার কাছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পূর্বে দায়েরকৃত সকল কেস-রেকর্ড খতিয়ে দেখা হোক।
২. নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবি ও র্যাব-১১ দ্রুত তদন্ত করে এই চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।
৩. অভিযুক্তদের মোবাইল কলের বিস্তারিত তথ্য (কললিস্ট) সংগ্রহ করে অন্যান্য মাদক ডিলার ও যোগাযোগকারীদের চিহ্নিত করা হোক।
৪. এলাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় পর্যায়ে গোয়েন্দা নজরদারি এবং ওই এলাকাগুলোতে রাতের টহল বাড়ানো হোক।
এলাকার এক স্থানীয় নারী বাসিন্দা বলেন, “আমরা দিন-রাত ভয়েই আছি। এরা ভোরে-রাতে ঘুরে বেড়িয়ে মাদক বিক্রি করে এবং কেউ কিছু বললে একেবারেই নিস্তব্ধ করে দেয়। আমরা চাই প্রশাসন এগিয়ে আসুক।”
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শাহিনুর আলম এ বিষয়ে বলেন, “এদের নামে এর আগেও অভিযোগ পেয়েছি; আমরা রেকর্ড যাচাই করে প্রয়োজনীয় আইনী পদক্ষেপ নিচ্ছি/নেব।”



