ইসলাম ধর্ম

হাসরের মাঠে কারা অগ্রগামী? ইবনে কাসীরের তাফসিরে স্পষ্ট ইঙ্গিত

ইসলামিক বিচিত্রা ডেস্ক: পবিত্র কোরআনে ‘السابقون’ (আভিধানিক অর্থ: অগ্রবর্তীগণ) শব্দটির মাধ্যমে এমন এক সৌভাগ্যবান দলের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, যাঁরা দুনিয়ায় সৎকর্ম ও ন্যায়পরায়ণতার ক্ষেত্রে অন্যদের ছাড়িয়ে গেছেন। এই অগ্রগামী সম্প্রদায় প্রতিটি কল্যাণকর কাজে সবার আগে থেকেছেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) আহবানে দ্রুত সাড়া দিয়েছেন।

তাফসীরের কিতাবগুলোতে এই অগ্রবর্তী দলের কাজের বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে। জিহাদের আহ্বান হোক, আল্লাহর পথে দান-সদকা হোক, জনসেবার কাজ হোক, কিংবা সত্যের দিকে দাওয়াতের মতো কল্যাণকর কর্মে তাঁরা সবসময়ই পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন।

এই অগ্রবর্তী দলের পরিচয় নিয়ে তাফসীরবিদদের মধ্যে বিভিন্ন মতামত বিদ্যমান রয়েছে:

১. নবী-রাসূলগণ: প্রখ্যাত তাফসীরকার মুজাহিদ (রহ.) ব্যাখ্যা করেন যে, অগ্রবর্তীগণ বলে মূলত নবী-রাসূলগণকে বোঝানো হয়েছে।

২. দুই কেবলার অনুসারী: ইবনে সীরীন (রহ.)-এর মতে, তাঁরা হলেন সেই সৌভাগ্যবানরা যারা প্রথমে বাইতুল মুকাদ্দাস এবং পরে বাইতুল্লাহ, উভয় কেবলার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করেছেন।

৩. প্রত্যেক উম্মতের অগ্রগামী দল: হাসান এবং কাতাদাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) মত দেন যে, প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই একটি অগ্রবর্তী সম্প্রদায় বিদ্যমান রয়েছে, যাঁরা নেক কাজে এগিয়ে থাকেন।

প্রখ্যাত তাফসীরকার ইবনে কাসীর (রহ.) এসব উক্তি উল্লেখ করার পর সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, প্রতিটি ব্যাখ্যাই স্ব-স্ব স্থানে সঠিক ও বিশুদ্ধ। মূলকথা হলো, পৃথিবীতে কল্যাণের প্রসার এবং অকল্যাণের উচ্ছেদের জন্য ত্যাগ, কোরবানি এবং শ্রমদান বা জীবন উৎসর্গ করার যে কোনো সুযোগই এসেছে, যিনি তাতে অগ্রগামী হয়ে কাজ করেছেন, তিনিই এই দলের অন্তর্ভুক্ত।

তাঁদের এই অগ্রগামিতার প্রতিদান স্বরূপ আখেরাতেও (হাশরের মাঠে) তাঁদেরকেই সবার আগে রাখা হবে। মূলত, দুনিয়ার জীবনে যাঁরা আল্লাহর পথে অগ্রগামী, পরকালের পুরস্কারেও তাঁরাই থাকবেন সবার সামনে।

(সূত্র: ইবনে কাসীর, কুরতুবী, ফাতহুল কাদীর)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button