বিশ্লেষণশিক্ষা

নেয়ামতস্বরূপ পুরুষেরা এবং তাঁদের নীরব আত্মত্যাগ সংসার জীবনে তাঁদের ভূমিকা কতটা অবহেলিত?

অপরাধ বিচিত্রা ডেস্ক: দীর্ঘ সতেরো বছরের সংসার জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে একজন লেখকের অকপট স্বীকারোক্তি—পুরুষেরা স্রষ্টার পক্ষ থেকে এক অপরিমেয় নেয়ামত। তাদের জীবন যেন পরিবার ও সন্তানদের সুখ-শান্তির জন্য এক নিরন্তর আত্মত্যাগ।

একজন পুরুষের কাঁধেই একটি সংসারের হাসি, জীবনের নিরাপত্তা এবং প্রতিদিনের শান্তি টিকে থাকে। নিজেদের যৌবন, স্বপ্ন ও শক্তি সবকিছু কুরবান করে তারা স্ত্রী-সন্তানের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করেন। লেখক উল্লেখ করেছেন, একজন পুরুষ নিজের আরামকে বিসর্জন দিয়ে কেবল পরিবারের স্বপ্নের হিসাব রাখেন, নিজেদের চাওয়া-পাওয়ার দিকে ভ্রুক্ষেপ করেন না।

পরিহাসের বিষয় হলো, পরিবারের জন্য এত কিছু করার পরেও এই মানুষগুলো অনেক সময় নিকটতম মানুষের কাছেই সবচেয়ে বেশি অবহেলিত হন। পুরুষের যেকোনো স্বাভাবিক আচরণকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়:

  • বাইরে গেলে বলা হয়— ‘বে-পরোয়া’।
  • ঘরে থাকলে বলা হয়— ‘অলস, অকর্মণ্য’।
  • সন্তানের ভুল ধরলে তিনি হন— ‘নির্দয়, কঠোর’।
  • স্ত্রীর প্রতি বেশি মায়া দেখালে হন— ‘বৌ-পাগল’, আবার মায়ের প্রতি যত্নশীল হলে হয়ে যান— ‘মা-পাগল’।

এই ধরনের ভুল বোঝাবুঝি ও অপবাদ সহ্য করেও পুরুষ নামের এই ‘বীরেরা’ পৃথিবীর সবচেয়ে শক্ত, অথচ কোমল হৃদয়ের অধিকারী।

একজন পিতা, যাকে লেখক ‘যোদ্ধা’ ও ‘রোবট’-এর সাথে তুলনা করেছেন, তিনি জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কাটান সন্তানদের মুখে হাসি দেখার বাসনায়। তিনি চান— সন্তান যেন সুখে থাকে, সফল হয় এবং নিরাপদ জীবন পায়।

পিতা এমন একজন মানুষ, যিনি সন্তানের কাছ থেকে উপেক্ষা বা কষ্ট পেলেও প্রতিদিন তাদের জন্য দোয়া করেন এবং ভালোবাসা পাঠান। নিজের ক্লান্ত দেহ ও পরিশ্রান্ত মন নিয়ে, ঘামে ভেজা শরীরেও তিনি সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য নিরলস সংগ্রাম চালিয়ে যান।

লেখাটিতে বাবার এক গভীর চিত্র তুলে ধরা হয়েছে— “যখন সন্তান ছোট, তখন তাকে হাঁটতে শেখান; আর যখন সন্তান বড় হয়ে যায়, তখন সেই সন্তানই অনেক সময় পিতার বুকের উপর পা রেখে এগিয়ে যায়। তবুও বাবা কষ্ট পান না— বরং হাসিমুখে বলেন, ‘যতদূর যাস, আল্লাহ তোর মঙ্গল করুক।’”

বাবা এমন এক নেয়ামত, যিনি সারাজীবন নিজের কষ্টার্জিত সম্পদ, সময় ও স্বপ্ন সন্তানদের জন্য অকাতরে বিলিয়ে দেন। মা যেমন সন্তানকে নয় মাস গর্ভে ধারণ করেন, ঠিক তেমনই বাবা সন্তানকে সারা জীবন মস্তিষ্ক ও হৃদয়ে ধারণ করে রাখেন।

লেখকের মতে, বাবার ছায়া মাথার উপর থাকা মানে পৃথিবী সুন্দর ও জীবন নিরাপদ থাকা। বাবা চলে গেলে জীবনের সব আলো যেন ম্লান হয়ে যায়।

তাই, বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় তাঁকে ভালোবাসা, সম্মান ও সেবায় কোনো ত্রুটি না করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। আর যারা পরলোকগত, তাদের জন্য প্রতিদিন আন্তরিকভাবে দোয়া করার অনুরোধ করা হয়েছে।

(দোয়া: আল্লাহ তাআলা সকল মা-বাবাকে দুনিয়া ও আখেরাতে সুখ, শান্তি ও রহমত দান করুন।)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button