প্রশ্ন-উত্তর: তাবিজ দিয়ে রোগ মুক্তি হলেও ব্যবহার কি বৈধ?

ইসলামের দৃষ্টিতে তাবিজের বিধান ও শরিয়তসম্মত চিকিৎসা পদ্ধতি
ইসলামিক বিচিত্রা ডেস্ক: প্রশ্ন: তাবিজ ব্যবহার করে যদি রোগমুক্তি হয়, তবে কি তা ব্যবহার করা বৈধ হবে?
উত্তর দিচ্ছেন: আবদুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
উত্তর: ইসলামের দৃষ্টিতে তাবিজ (কবজ) ব্যবহার করা সম্পূর্ণভাবে হারাম। এর দ্বারা সাময়িক উপকার হলো কি না, সেই ফলাফল এখানে ধর্তব্য নয়। ইসলাম কোনো মানবীয় যুক্তি বা ফলের ওপর নির্ভর করে না; বরং ইসলামের ভিত্তি হলো কুরআন ও সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত দলীল।
তাবিজ ব্যবহার করা যদি বৈধ হতো, তবে স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীগণ (রা.) অবশ্যই তা করতেন। কিন্তু তাঁদের কেউই এমন আমল করেননি। সুতরাং, উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য কোনো অবস্থাতেই তাবিজ ব্যবহার করা বৈধ হতে পারে না।
দলীল-প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি, তাবিজ-কবজ, হাতে পরা রিং, সুতা, তামা বা পিতলের আংটি ইত্যাদি অলৌকিক ক্ষমতা ধারণ করে বলে বিশ্বাস করে ব্যবহার করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
ইসলাম ধর্ম রোগ-ব্যাধির চিকিৎসার জন্য কুরআন ও সুন্নাহ-সম্মত পদ্ধতিকে সমর্থন করে। ইসলামে কুরআনের নির্দিষ্ট সূরা ও বিভিন্ন দুআ দ্বারা রুকইয়াহ্ (শরীয়তসম্মত ঝাড়ফুঁক) করার অনুমোদন রয়েছে, যা অত্যন্ত উত্তম একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। অনুরূপভাবে, বিভিন্ন আধুনিক মেডিসিন বা ঔষধ ব্যবহারেরও অনুমতি রয়েছে।
এই পদ্ধতিগুলো বৈধ হওয়ার কারণ হলো, স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পক্ষ থেকে সেগুলোর অনুমোদন রয়েছে। তিনি নিজেই রুকইয়াহ্-এর পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছেন এবং বিভিন্ন রোগ-ব্যাধির জন্য চিকিৎসার প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন। (এ বিষয়ে ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহ.) রচিত ‘তিব্বুন নববী’ কিতাবটি প্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য)।
উপরে উল্লেখিত শরীয়তসম্মত কোনো চিকিৎসায় যদি কাঙ্ক্ষিত ফল না-ও পাওয়া যায়, তবুও ধৈর্য ধারণ করা উচিত এবং আখিরাতে এর উত্তম প্রতিদানের আশা করা উচিত। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই হারামের দিকে পা বাড়ানো উচিত নয়। ঈমানকে দুর্বল করে এমন কাজ করা কোনো মুমিনের জন্য শোভনীয় নয়।
আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক পথে চলার তাওফিক দান করুন। আল্লাহু আলাম।



