
আমিরজাদা চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: শিক্ষাগত সনদ জালিয়াতি করে অতিরিক্ত এক বছর চাকরি ও মোটা অঙ্কের সরকারি অর্থ আত্মসাতের মামলায় বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) দুই সাবেক কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক হাবিবুল্লাহ সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজিএফসিএলর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. নূরুল আবছার এবং সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. নাসিরুজ্জামান তালুকদার রোববার (৩ নভেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এই মামলার প্রধান আসামি প্রতিষ্ঠানটির সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এটিএম শাহ আলম, যিনি অভিযোগ ওঠার পর দেশ ত্যাগ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, এটিএম শাহ আলম তার এসএসসি সনদে জন্মতারিখ জাল করে এক বছর বেশি চাকরি করেন এবং ওই সময়ের মধ্যে প্রায় ৭৪ লাখ টাকার বেশি বেতন-ভাতা ও সুবিধা আত্মসাৎ করেন।
বিজিএফসিএলর বর্তমান উপ-মহাব্যবস্থাপক (লিগ্যাল) মো. আবুল বাশার মিজি গত বছরের ২২ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
বাদি অভিযোগ করেন, ২০১৪ সালে এটিএম শাহ আলম নিজের জন্মতারিখ পরিবর্তনের আবেদন করেন এবং তৎকালীন এমডি মো. নূরুল আবছার ও মহাব্যবস্থাপক মো. নাসিরুজ্জামান তালুকদারের সহায়তায় তা অনুমোদন করিয়ে নেন।
পরে তদন্তে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে নিশ্চিত করা হয়, এটিএম শাহ আলমের প্রকৃত জন্মতারিখ ১৯৬১ সালের ২৮ ডিসেম্বর, কিন্তু চাকরিতে তিনি ১৯৬২ সালের ২৮ ডিসেম্বরকে জন্মতারিখ হিসেবে ব্যবহার করেন। এতে তিনি এক বছর বেশি চাকরি করেন এবং অতিরিক্ত সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেন।
বিষয়টি নিয়ে পেট্রোবাংলা ও বিজিএফসিএল উভয় প্রতিষ্ঠানের তদন্তে জালিয়াতির প্রমাণ মেলে। এছাড়া বিজিএফসিএল’র পরিচালনা পর্ষদও মামলার বিষয়ে অবহিত করে গত জুলাই মাসে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। নিজেদের তদন্ত শেষে গত বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় অভিযুক্ত প্রধান আসামি এটিএম শাহ আলম, দ্বিতীয় আসামি সাবেক এমডি মো. নূরুল আবছার এবং তৃতীয় আসামি সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. নাসিরুজ্জামান তালুকদার।
তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪০৯, ৪২০, ৪৬৫, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ৩৪ ধারায় প্রতারণা, জালিয়াতি ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।



