সাবেক বিমান বাহিনী প্রধানের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, সহযোগীর ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ

অপরাধ বিচিত্রা ডেস্ক: দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নানের দশটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার সহযোগী সানজিদা আক্তারের মালিকানাধীন দুটি ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ এই আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই নির্দেশনা দেন বলে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আক্তারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, ক্রোকের আদেশ হওয়া ফ্ল্যাট দুটি ঢাকার নিকুঞ্জে অবস্থিত। এছাড়া, অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া দশটি ব্যাংক হিসাবে মোট ৪০ লাখ ৫৬ হাজার ৫৮৩ টাকা জমা রয়েছে।
দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান সাবেক বিমান বাহিনী প্রধানের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের জন্য আদালতে আবেদন করেন।
আবেদনে দুদক উল্লেখ করে, সাবেক এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে নিজের নামে এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তির নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের অনুসন্ধান শেষে কমিশন এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
মামলার তদন্তকালে বিভিন্ন নথি ও জব্দ করা আলামত পর্যালোচনায় দেখা যায়, শেখ আব্দুল হান্নান অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ গোপন করার উদ্দেশ্যে তার সহযোগী সানজিদা আক্তারের নামে সম্পদ ক্রয় করেছেন এবং সানজিদা আক্তার এতে তাকে সহযোগিতা করেছেন।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি সানজিদা আক্তারের নামে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকার নিকুঞ্জ-এ আনুমানিক ৯৫ লাখ টাকা মূল্যের দুটি ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন। এছাড়া, তার (হান্নানের) নামে বিভিন্ন ব্যাংকে প্রায় ৪৫ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট (এফডিআর) সংরক্ষিত আছে। তল্লাশিকালে তার বাসা থেকে প্রায় ২৬ লাখ টাকার বিভিন্ন দেশের মুদ্রা উদ্ধার করা হয়, যা তার বৈধ আয়ের উৎসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে প্রতীয়মান হয়।
তদন্ত সূত্র থেকে জানা গেছে, সানজিদা আক্তার এসব স্থাবর সম্পদ এবং আব্দুল হান্নান তার অস্থাবর সম্পদসমূহ অন্য কোথাও হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। এমতাবস্থায়, তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই এই সম্পদগুলো হস্তান্তর হয়ে গেলে পরবর্তী সময়ে সেই টাকা উদ্ধার করা কঠিন হবে। তাই তাদের এসব স্থাবর সম্পদ জরুরি ভিত্তিতে ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা অপরিহার্য বলে মনে করছে দুদক।



